ঢাকা , রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কণ্ঠযোদ্ধা আব্দুল জব্বারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

মো. আলমগীর খন্দকার
  • প্রকাশের সময় : ১০:৪৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪
  • / ৫২ বার পড়া হয়েছে
print news

‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ও ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ ইত্যাদি কালজয়ী গানের শিল্পী আব্দুল জব্বারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ।বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী আব্দুল জব্বার ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।

আব্দুল জব্বার ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি মেট্রিক পাস করেন। ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে গান গাওয়া শুরু করেন। চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান গেয়েছিলেন ১৯৬২ সালে। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হোন। ১৯৬৪ সালে জহির রায়হান পরিচালিত ‘সংগম’ সিনেমার গানে কণ্ঠ দেন তিনি। ১৯৬৮ সালে ‘এতটুকু আশা’ সিনেমাতে সত্য সাহার সুরে তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি ভীষণ জনপ্রিয়তা লাভ করে। সেই বছর ‘পীচ ঢালা পথ’ সিনেমাতে রবিন ঘোষের সুরে ‘পীচ ঢালা এই পথটারে ভালোবেসেছি’ ও ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’ সিনেমাতে রাজা হোসেন খানের সুরে ‘সুচরিতা যেওনাকো, আর কিছুক্ষণ থাকো’-এ দুটি গান তাকে এনে দেয় আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা। ১৯৭৮ সালে ‘সারেং বৌ’ সিনেমাতে আলম খানের সুরে তার গাওয়া ‘ও রে নীল দরিয়া’ গানটিও ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় ‘কোথায় আমার নীল দরিয়া’ শিরোনামে তার প্রথম মৌলিক অ্যালবাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত ‘সালাম সালাম হাজার

সালাম’সহ অনেক দেশাত্মবোধক গানের গায়ক হিসেবে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ এবং ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গান তিনটি ২০০৬ সালের মার্চ মাসজুড়ে বিবিসি বাংলার আয়োজনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাংলা ২০ গানের মধ্যে স্থান করে নেয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা জোগাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে অনেক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তার গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের সময় ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়য়ের সঙ্গে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন আব্দুল জব্বার। বরেণ্য এ শিল্পী অনেক সিনেমাতে প্লেব্যাক করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো সংগম (১৯৬৪), নবাব সিরাজউদ্দৌলা (১৯৬৭), উলঝন (১৯৬৭), পীচ ঢালা পথ (১৯৬৮), এতটুকু আশা (১৯৬৮), ঢেউয়ের পর ঢেউ (১৯৬৮), ভানুমতি (১৯৬৯), ক খ গ ঘ ঙ (১৯৭০), দীপ নেভে নাই (১৯৭০), বিনিময়, (১৯৭০), জীবন থেকে নেওয়া (১৯৭০), নাচের পুতুল (১৯৭১), মানুষের মন (১৯৭২), স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা (১৯৭৩), ঝড়ের পাখি (১৯৭৩), আলোর মিছিল (১৯৭৪), সূর্যগ্রহণ (১৯৭৬), তুফান (১৯৭৮), অঙ্গার (১৯৭৮), সারেং বৌ (১৯৭৮), সখী তুমি কার (১৯৮০) ও কলমিলতা (১৯৮১)। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা। এর মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক (১৯৭৩), একুশে পদক (১৯৮০), স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৯৬), বাচসাস পুরস্কার (২০০৩), সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস-আজীবন সম্মাননা (২০১১) ও জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কার।

ট্যাগস :

এই নিউজটি শেয়ার করুন

কণ্ঠযোদ্ধা আব্দুল জব্বারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশের সময় : ১০:৪৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪
print news

‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ও ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ ইত্যাদি কালজয়ী গানের শিল্পী আব্দুল জব্বারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ।বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী আব্দুল জব্বার ২০১৭ সালের ৩০ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।

আব্দুল জব্বার ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি মেট্রিক পাস করেন। ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে গান গাওয়া শুরু করেন। চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান গেয়েছিলেন ১৯৬২ সালে। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হোন। ১৯৬৪ সালে জহির রায়হান পরিচালিত ‘সংগম’ সিনেমার গানে কণ্ঠ দেন তিনি। ১৯৬৮ সালে ‘এতটুকু আশা’ সিনেমাতে সত্য সাহার সুরে তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি ভীষণ জনপ্রিয়তা লাভ করে। সেই বছর ‘পীচ ঢালা পথ’ সিনেমাতে রবিন ঘোষের সুরে ‘পীচ ঢালা এই পথটারে ভালোবেসেছি’ ও ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’ সিনেমাতে রাজা হোসেন খানের সুরে ‘সুচরিতা যেওনাকো, আর কিছুক্ষণ থাকো’-এ দুটি গান তাকে এনে দেয় আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা। ১৯৭৮ সালে ‘সারেং বৌ’ সিনেমাতে আলম খানের সুরে তার গাওয়া ‘ও রে নীল দরিয়া’ গানটিও ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় ‘কোথায় আমার নীল দরিয়া’ শিরোনামে তার প্রথম মৌলিক অ্যালবাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত ‘সালাম সালাম হাজার

সালাম’সহ অনেক দেশাত্মবোধক গানের গায়ক হিসেবে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তার গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ এবং ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গান তিনটি ২০০৬ সালের মার্চ মাসজুড়ে বিবিসি বাংলার আয়োজনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাংলা ২০ গানের মধ্যে স্থান করে নেয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা জোগাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে অনেক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তার গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের সময় ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়য়ের সঙ্গে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন আব্দুল জব্বার। বরেণ্য এ শিল্পী অনেক সিনেমাতে প্লেব্যাক করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো সংগম (১৯৬৪), নবাব সিরাজউদ্দৌলা (১৯৬৭), উলঝন (১৯৬৭), পীচ ঢালা পথ (১৯৬৮), এতটুকু আশা (১৯৬৮), ঢেউয়ের পর ঢেউ (১৯৬৮), ভানুমতি (১৯৬৯), ক খ গ ঘ ঙ (১৯৭০), দীপ নেভে নাই (১৯৭০), বিনিময়, (১৯৭০), জীবন থেকে নেওয়া (১৯৭০), নাচের পুতুল (১৯৭১), মানুষের মন (১৯৭২), স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা (১৯৭৩), ঝড়ের পাখি (১৯৭৩), আলোর মিছিল (১৯৭৪), সূর্যগ্রহণ (১৯৭৬), তুফান (১৯৭৮), অঙ্গার (১৯৭৮), সারেং বৌ (১৯৭৮), সখী তুমি কার (১৯৮০) ও কলমিলতা (১৯৮১)। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা। এর মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক (১৯৭৩), একুশে পদক (১৯৮০), স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৯৬), বাচসাস পুরস্কার (২০০৩), সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস-আজীবন সম্মাননা (২০১১) ও জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কার।