নবীনগরে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের
- প্রকাশের সময় : ১১:২০:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ২১ বার পড়া হয়েছে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় প্রথমবারের মতো মালচিং পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছে কৃষকরা। সল্প খরচে দ্রুত সময়ের মধ্যে বছরে দুইবার ফলন এবং অসময়ে রঙিন তরমুজের সঠিক বাজার মূল্য পাওয়ায় এ তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব তরমুজ আবাদ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব জমি থেকে ফলন তুলে বিক্রি শুরু হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে বীজসহ সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে কৃষি অফিস।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, “Flood Reconstruction Emergency Assistance Project এর আওতায় উপজেলার বীরগাঁও, নাটঘর, বগডহর এলাকায় মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজের চারা রোপণ করা হয়েছে। ফলে পোকামাকড় আর গাছের গোড়ায় আগাছা না জন্মানোয় বাড়তি পরিচর্যা করতে হচ্ছে না কৃষকদের।
নাটঘর ইউনিয়নের বড়হিত গ্রামের কৃষক শামীম আহমেদ জানান, সাধারণত শীতকালে আবাদ করে মার্চ-এপ্রিল মাসে উত্তোলন করা হতো। বর্তমানে কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগীতায় উন্নতমানের সূর্যডিম জাতের তরমুজ আবাদ করেছি। ২০ শতক জমি থেকে ইতিমধ্যে ৯২ হাজার টাকা তরমুজ বিক্রি করেছি। আরো ৫০ হাজার টাকা বিক্রয় করার সুযোগ আছে। অতি অল্প সময়ে এই ফসল আবাদে অনেক কৃষকের নতুন করে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে উপসহকারী কৃষি অফিসার নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে।
বগডগর গ্রামের কৃষক আব্দুস ছালাম জানান, পরিত্যক্ত অনাবাদি জায়গায় কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমবারের মতো গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদ করেছি। এই সময়ে তরমুজ আবাদ এই ধারণা আমার জন্য নতুন। এখন পর্যন্ত ভালো ফলন আসছে। আগামীতে আরো জমি গ্রীষ্মকালীন তরমুজের আওতায় নিয়ে আসবো।
নবীনগর পূর্ব ব্লকের উপসহকারী কৃষি অফিসার আবু নোমান জানান, অসময়ে এই ধরনের সবজি আবাদে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিটি তরমুজ ২ থেকে ৩ কেজি ওজনের হচ্ছে, বাজারমূল্য বেশ ভালো।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, নবীনগর উপজেলায় এই বছর প্রায় ২ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদ হয়েছে। বিশেষ করে সূর্যডিম এবং বাংলালিংক জাতের তরমুজের চাহিদা বাড়ছে। পুকুর পাড়, পরিত্যক্ত জায়গায় আবাদের জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম লিটন প্রতিদিনের পোস্টকে জানান, “বাংলাদেশের কৃষি জলবায়ুর সাথে অভিযোজন করে এগিয়ে যাচ্ছে। মাত্র ৬০-৬৫ দিনের মধ্যেই তরমুজ বিক্রয় উপযোগী হয়ে যায়। গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদ কৌশল সম্পর্কে আমরা মাঠ দিবস এবং কৃষক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হাতে কলমে শিখিয়ে দিচ্ছি। বর্তমানে এটি টেকসই আবাদ হিসেবে অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক”।
কৃষকদের গ্রীষ্মকালীন তরমুজের বীজ, মালচিং পেপার ও পরিচর্যা বাবদ আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাদের সব ধরনের পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। তাই উপজেলায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
ফল হিসেবে তরমুজের চাহিদা রয়েছে অনেক। তরমুজে ৯২ শতাংশই পানি। শরীরে পানি ও তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ক্যারোটিনয়েড দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।