০১:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্বামীর পরকিয়ার জেরে তিন সন্তানের জননীর আ’ত্মহ’ত্যা

  • Mihir Kumer Deb
  • আপডেট : ০৬:৪১:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩
  • ১০৮ বার পড়া হয়েছে

এহসানুল হক রিপন, প্রতিদিনের পোস্ট: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন সন্তানের জননীর আ’ত্মহ’ত্যার প্ররোচনা ও সহায়তার অপরাধে স্বামী সাদ্দাম হোসেন (৩২) সহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র সুহিলপুর (নোয়াজের বাড়ি) এলাকায়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে আবু তালেব’র মেয়ে মাসু বেগম (২৭) স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি করে ঘরে থাকা বার্নিশের (তারফিন) বিষ খেয়ে ফেলে। পরে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসু বেগম মারা যায়। পরে নিহতের পিতা আবু তালেব (৭১) বাদী হয়ে স্বামী সাদ্দাম হোসেন(৩২), সাচ্চু মিয়া(৪৫),শারফিন মিয়া(৪২), ফাতেমা বেগম (৪০), সালমা বেগম সহ ৫ জনকে আসামি করে গত ৭ এপ্রিল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

নিহতের বাবা আবু তালেব মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ১৪/১৫ বছর আগে সামাজিকভাবে সাদ্দাম হোসেনের সাথে আমার মেয়ে মাসু বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মেয়ের ঘর আলোকিত করে ৩ ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। বড় ছেলে রাহাদ (১০), মেজো ছেলে রায়হান (৮) ও ছোট ছেলে আরিয়ান আড়াই বছর। বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে ছোট খাটো বিষয় নিয়ে প্রায়ই মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। কয়েক বছর আগে সাদ্দাম গোপনে আরেকটি বিয়ে করে বিদেশে চলে যায়। ঠিক ভাবে পরিবারের ভরনপোষণ করতো না সাদ্দাম। আমার মেয়ে তার ব্যবহারের দের ভরি স্বর্ণ বন্ধক রেখে ৭৫ হাজার টাকা আনে। পরে বিদেশ থেকে আসার পরে আমার মেয়েকে সাদ্দাম হোসেন স্বর্নের জন্য শারিরীক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে। আমি পরে টাকা দিয়ে স্বর্ন গয়না ছুটাইয়া দেই। তখন সাদ্দাম তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে স্বর্ণ গয়না গুলো দিয়ে প্রায়ই ভিডিও কল দিয়ে কথা বলে। এনিয়ে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া হইছে, কোন মেয়েই চায়না তার স্বামী অন্য মেয়ের পরকীয়ায় আসক্ত হোক। আমার মেয়েরে মাইরা ফালাইছে আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

নিহত মাসু বেগম’র দ্বিতীয় ছেলে রায়হান (৮) স্থানীয় মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের ছাত্র বলেন, আমার মারে প্রায়ই আমার বাবা বকাবকি ও মারধোর করতো।

নিহতের ভাই ইয়ার হোসেন বলেন, আমার বোনকে তারা মাইরা ফেলছে। আমরা থানায় মামলা দায়ের করলে সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির মালামাল সরিয়ে ফেলেছে। সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব মিয়া বলেন, মেয়েটাকে নিয়ে দরবার হইছে আমি শুনছি, আমি চাই এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হউক। কম কষ্টে মেয়েটা তিনটা বাচ্চা রাইখা আত্মহত্যা করেছে না।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, নিহতের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।

এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ন বেআইনী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ /প্রতিদিনের পোস্ট

Facebook Comments Box
ট্যাগস :
সম্পাদনাকারীর তথ্য

Mihir Kumer Deb

error: Content is protected !!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্বামীর পরকিয়ার জেরে তিন সন্তানের জননীর আ’ত্মহ’ত্যা

আপডেট : ০৬:৪১:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

এহসানুল হক রিপন, প্রতিদিনের পোস্ট: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন সন্তানের জননীর আ’ত্মহ’ত্যার প্ররোচনা ও সহায়তার অপরাধে স্বামী সাদ্দাম হোসেন (৩২) সহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র সুহিলপুর (নোয়াজের বাড়ি) এলাকায়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে আবু তালেব’র মেয়ে মাসু বেগম (২৭) স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি করে ঘরে থাকা বার্নিশের (তারফিন) বিষ খেয়ে ফেলে। পরে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসু বেগম মারা যায়। পরে নিহতের পিতা আবু তালেব (৭১) বাদী হয়ে স্বামী সাদ্দাম হোসেন(৩২), সাচ্চু মিয়া(৪৫),শারফিন মিয়া(৪২), ফাতেমা বেগম (৪০), সালমা বেগম সহ ৫ জনকে আসামি করে গত ৭ এপ্রিল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

নিহতের বাবা আবু তালেব মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ১৪/১৫ বছর আগে সামাজিকভাবে সাদ্দাম হোসেনের সাথে আমার মেয়ে মাসু বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মেয়ের ঘর আলোকিত করে ৩ ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। বড় ছেলে রাহাদ (১০), মেজো ছেলে রায়হান (৮) ও ছোট ছেলে আরিয়ান আড়াই বছর। বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে ছোট খাটো বিষয় নিয়ে প্রায়ই মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। কয়েক বছর আগে সাদ্দাম গোপনে আরেকটি বিয়ে করে বিদেশে চলে যায়। ঠিক ভাবে পরিবারের ভরনপোষণ করতো না সাদ্দাম। আমার মেয়ে তার ব্যবহারের দের ভরি স্বর্ণ বন্ধক রেখে ৭৫ হাজার টাকা আনে। পরে বিদেশ থেকে আসার পরে আমার মেয়েকে সাদ্দাম হোসেন স্বর্নের জন্য শারিরীক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে। আমি পরে টাকা দিয়ে স্বর্ন গয়না ছুটাইয়া দেই। তখন সাদ্দাম তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে স্বর্ণ গয়না গুলো দিয়ে প্রায়ই ভিডিও কল দিয়ে কথা বলে। এনিয়ে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া হইছে, কোন মেয়েই চায়না তার স্বামী অন্য মেয়ের পরকীয়ায় আসক্ত হোক। আমার মেয়েরে মাইরা ফালাইছে আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

নিহত মাসু বেগম’র দ্বিতীয় ছেলে রায়হান (৮) স্থানীয় মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের ছাত্র বলেন, আমার মারে প্রায়ই আমার বাবা বকাবকি ও মারধোর করতো।

নিহতের ভাই ইয়ার হোসেন বলেন, আমার বোনকে তারা মাইরা ফেলছে। আমরা থানায় মামলা দায়ের করলে সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির মালামাল সরিয়ে ফেলেছে। সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব মিয়া বলেন, মেয়েটাকে নিয়ে দরবার হইছে আমি শুনছি, আমি চাই এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হউক। কম কষ্টে মেয়েটা তিনটা বাচ্চা রাইখা আত্মহত্যা করেছে না।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, নিহতের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।

এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ন বেআইনী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ /প্রতিদিনের পোস্ট

Facebook Comments Box