০১:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

“১৫ মাসেই রিজার্ভ কমেছে ১৪ বিলিয়ন ডলার”

  • Khalid Hasan Ripu
  • আপডেট : ০৬:০৫:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২
  • ৫৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিদিনের পোস্ট || ১৫ মাসেই রিজার্ভ কমেছে ১৪ বিলিয়ন ডলার|

ডলার বিক্রির কারণে নানা পদক্ষেপ সত্ত্বেও দিন দিন কমে যাচ্ছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এবার রিজার্ভ নেমেছে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। আজ বুধবার দিনশেষে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার। এটি গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। যদিও ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ আরও অনেক কম। গত ১৫ মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রিজার্ভ যে গতিতে কমছে তা অবশ্যই শঙ্কা ও উদ্বেগের কারণ। তাই রিজার্ভ সাশ্রয়ে নতুন পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়েই রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। এতে প্রতিদিনই কমে যাচ্ছে রিজার্ভ। এ ছাড়া প্রতি দুই মাস পর পর আকুর পেমেন্টের পেছনেও বড় অঙ্কের রিজার্ভ খরচ হচ্ছে।

জানা গেছে, বিলাসি পণ্য আমদানিতে শতভাগ এলসি মার্জিনের শর্তারোপের পর গত জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে আমদানির জন্য এলসি খোলা কিছুটা কমেছে। তবে আগের বকেয়া আমদানির এলসি নিষ্পত্তির জন্য অনেক ব্যাংকেই ডলারের সংকট আছে। এ ছাড়া বৈদেশিক ঋণের কিস্তিও পরিশোধ করতে হচ্ছে।

করোনা পরিস্থিতি উন্নতির পর বিদেশ ভ্রমণ ও চিকিৎসা খাতে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ বেড়েছে। এতে ডলারের ওপর চাপও বেড়েছে। এ সংকট মেটাতে এবং টাকা ও ডলারের বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিদিনই ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। বিশেষ করে সরকারের বিভিন্ন আমদানিতে রিজার্ভ থেকে ডলার দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, আজও কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ৭ কোটি ১০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সব মিলিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস (১ জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত) রিজার্ভ থেকে ৬০৫ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এই হারে যদি ডলার বিক্রি করা হয়, তাহলে অর্থবছর শেষে ডলার বিক্রির নতুন রেকর্ড করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত অর্থবছরেরও রিজার্ভ থেকে বিপুল অঙ্কের ডলার বিক্রি করা হয়। পুরো অর্থবছরে ৭৬২ কোটি ১৭ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনোই রিজার্ভ থেকে এক অর্থবছরে এতবেশি ডলার বিক্রি করা হয়নি।

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির সময়ে আমদানিতে ধীরগতি এবং প্রবাসী আয়ে উড়ন্ত গতির ওপর ভর করে গত বছরের ২৪ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ প্রথমবার ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে, যা ছিল অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এরপর থেকে রিজার্ভের পরিমাণ কমতে শুরু করে।

সর্বশেষ গত ৭ নভেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মেয়াদের প্রায় ১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার মুল্যের আমদানি বিল পরিশোধ করার পর রিজার্ভ নেমে আসে ৩৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার।

এরপর থেকে রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরেই অবস্থান করছিল। তবে রিজার্ভ থেকে টানা ডলার বিক্রির চাপে গতকাল তা ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসে।

ডলার সংকটের কারণে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা চলছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। বেড়েই চলেছে মার্কিন ডলারের দাম। ফলে ক্রমশ কমছে টাকার মান। গতকাল আন্তব্যাংকে ডলারের দাম ছিল ১০৪ টাকা। আর খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হয় ১০৮ থেকে ১১০ টাকায়। অবশ্য, চলতি অর্থবছরেই খোলাবাজার ডলারের দর ১২০ টাকায় উঠেছিল। ব্যাংকেও নগদ ডলারের দাম ১১৫ টাকা ছাড়িয়ে যায়।

এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ । রিপু /প্রতিদিনের পোস্ট

Facebook Comments Box
সম্পাদনাকারীর তথ্য

Khalid Hasan Ripu

জনপ্রিয়

মৌলভীবাজারে জাল টাকাসহ আটক-১

error: Content is protected !!

“১৫ মাসেই রিজার্ভ কমেছে ১৪ বিলিয়ন ডলার”

আপডেট : ০৬:০৫:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিদিনের পোস্ট || ১৫ মাসেই রিজার্ভ কমেছে ১৪ বিলিয়ন ডলার|

ডলার বিক্রির কারণে নানা পদক্ষেপ সত্ত্বেও দিন দিন কমে যাচ্ছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এবার রিজার্ভ নেমেছে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। আজ বুধবার দিনশেষে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার। এটি গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। যদিও ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ আরও অনেক কম। গত ১৫ মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রিজার্ভ যে গতিতে কমছে তা অবশ্যই শঙ্কা ও উদ্বেগের কারণ। তাই রিজার্ভ সাশ্রয়ে নতুন পদক্ষেপ নিতে হবে।

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়েই রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। এতে প্রতিদিনই কমে যাচ্ছে রিজার্ভ। এ ছাড়া প্রতি দুই মাস পর পর আকুর পেমেন্টের পেছনেও বড় অঙ্কের রিজার্ভ খরচ হচ্ছে।

জানা গেছে, বিলাসি পণ্য আমদানিতে শতভাগ এলসি মার্জিনের শর্তারোপের পর গত জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে আমদানির জন্য এলসি খোলা কিছুটা কমেছে। তবে আগের বকেয়া আমদানির এলসি নিষ্পত্তির জন্য অনেক ব্যাংকেই ডলারের সংকট আছে। এ ছাড়া বৈদেশিক ঋণের কিস্তিও পরিশোধ করতে হচ্ছে।

করোনা পরিস্থিতি উন্নতির পর বিদেশ ভ্রমণ ও চিকিৎসা খাতে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ বেড়েছে। এতে ডলারের ওপর চাপও বেড়েছে। এ সংকট মেটাতে এবং টাকা ও ডলারের বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিদিনই ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। বিশেষ করে সরকারের বিভিন্ন আমদানিতে রিজার্ভ থেকে ডলার দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, আজও কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ৭ কোটি ১০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সব মিলিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস (১ জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত) রিজার্ভ থেকে ৬০৫ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এই হারে যদি ডলার বিক্রি করা হয়, তাহলে অর্থবছর শেষে ডলার বিক্রির নতুন রেকর্ড করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত অর্থবছরেরও রিজার্ভ থেকে বিপুল অঙ্কের ডলার বিক্রি করা হয়। পুরো অর্থবছরে ৭৬২ কোটি ১৭ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনোই রিজার্ভ থেকে এক অর্থবছরে এতবেশি ডলার বিক্রি করা হয়নি।

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির সময়ে আমদানিতে ধীরগতি এবং প্রবাসী আয়ে উড়ন্ত গতির ওপর ভর করে গত বছরের ২৪ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ প্রথমবার ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে, যা ছিল অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এরপর থেকে রিজার্ভের পরিমাণ কমতে শুরু করে।

সর্বশেষ গত ৭ নভেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মেয়াদের প্রায় ১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার মুল্যের আমদানি বিল পরিশোধ করার পর রিজার্ভ নেমে আসে ৩৪ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন ডলার।

এরপর থেকে রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরেই অবস্থান করছিল। তবে রিজার্ভ থেকে টানা ডলার বিক্রির চাপে গতকাল তা ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসে।

ডলার সংকটের কারণে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা চলছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। বেড়েই চলেছে মার্কিন ডলারের দাম। ফলে ক্রমশ কমছে টাকার মান। গতকাল আন্তব্যাংকে ডলারের দাম ছিল ১০৪ টাকা। আর খোলাবাজারে ডলার বিক্রি হয় ১০৮ থেকে ১১০ টাকায়। অবশ্য, চলতি অর্থবছরেই খোলাবাজার ডলারের দর ১২০ টাকায় উঠেছিল। ব্যাংকেও নগদ ডলারের দাম ১১৫ টাকা ছাড়িয়ে যায়।

এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ । রিপু /প্রতিদিনের পোস্ট

Facebook Comments Box