ঢাকা , রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একটি সেতুর অপেক্ষায় হাজারো মানুষের অপেক্ষার প্রহর

প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশের সময় : ০৬:১৭:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
  • / ১ বার পড়া হয়েছে
print news
3

একটি সেতুর অপেক্ষায় হাজারো মানুষের অপেক্ষার প্রহর

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

৪ যুগ ধরে স্বপ্নের সেতুর অপেক্ষায় হাজারো মানুষ।

শুধু মাত্র ৬০ ফুটের একটি সেতুর অভাবে নিত্য দিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছান শত শত মানুষ-তাদের মধ্যেই রয়েছে ভবিষ্যতের স্বপ্ন বয়ে বেড়ানো অসংখ্য শিক্ষার্থী।

উদনাছড়া নদীর নরম স্রোতে বয়ে গেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখাঁন ইউনিয়নের নলোয়ারপাড়ের বুক চিরে। এক পাড়ে শিক্ষার আলো ছড়ানো তেলিআব্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডুবাগাঁও বাহরুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা আর ইউনিয়ন পরিষদের ব্যস্ত প্রাঙ্গণ। অন্য পাড়ে দুর্গানগর, গোলগাল, গাজিপুর ও আমরাইলছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ জনবসতি-যেখানে নিত্য দিনের জীবন চলে নদীর ওপার-এপার ঘুরে।

প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। বৃষ্টির দিনে সাঁকো পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। প্রায়শই শিক্ষার্থী ও পথচারীরা পড়ে আহত হন। এ কারণে অনেক অভিভাবক সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

৪ যুগ ধরে এলাকাবাসী সেতুর দাবি জানিয়ে আসলেও মন্ত্রী, এমপি থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসের বাণী ছাড়া উদনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কোনো পদক্ষেপ এখনো নেয়া হয়নি। এ দাবি জানাতে জানাতে অনেকেই কিশোর থেকে যৌবন পার করে বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। অর্ধশত বছরের প্রতীক্ষার পরও সেতু না হওয়ায় সরকারের উদাসীনতায় ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।

ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে পারাপারই সিন্দুরখাঁন ইউনিয়নের নিত্যদিনের বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনবাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হয় কয়েক হাজার মানুষ। সেতু না থাকায় শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, এমনকি রোগী পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সবাইকে। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও প্রসূতি মা রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া যেন এক জেনেশুনে এক ভয়াবহ যাত্রাপথ। উন্নয়নের ছোঁয়া যখন দেশের সর্বত্র, তখনও একটি সেতুর অভাবে থেমে আছে এই জনপদের অগ্রযাত্রা।

উপজেলার সিন্দুরখাঁন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াছিন আরাফাত রবিন জানান, যেহেতু এটা দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অধিনে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসলে আমরা ব্রীজ নির্মাণের জন্য দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ে আবেদন পাঠাবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইসলাম উদ্দিন বলেন, স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় সেতু নির্মাণ জরুরি। দ্রুত সময়ের মধ্যে উদনা নদীর ওপর সেতুর প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

এলাকাবাসীর আকাঙ্ক্ষা উদনা নদীর ওপর স্বপ্নের সেতু, যা বদলে দিতে পারে দীর্ঘ প্রতীক্ষার প্রতিটি নাগরিকের দিন, জীবনাযাত্রা, শিক্ষা ও স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ট্যাগস :

এই নিউজটি শেয়ার করুন

একটি সেতুর অপেক্ষায় হাজারো মানুষের অপেক্ষার প্রহর

প্রকাশের সময় : ০৬:১৭:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
print news
3

একটি সেতুর অপেক্ষায় হাজারো মানুষের অপেক্ষার প্রহর

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

৪ যুগ ধরে স্বপ্নের সেতুর অপেক্ষায় হাজারো মানুষ।

শুধু মাত্র ৬০ ফুটের একটি সেতুর অভাবে নিত্য দিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছান শত শত মানুষ-তাদের মধ্যেই রয়েছে ভবিষ্যতের স্বপ্ন বয়ে বেড়ানো অসংখ্য শিক্ষার্থী।

উদনাছড়া নদীর নরম স্রোতে বয়ে গেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখাঁন ইউনিয়নের নলোয়ারপাড়ের বুক চিরে। এক পাড়ে শিক্ষার আলো ছড়ানো তেলিআব্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডুবাগাঁও বাহরুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা আর ইউনিয়ন পরিষদের ব্যস্ত প্রাঙ্গণ। অন্য পাড়ে দুর্গানগর, গোলগাল, গাজিপুর ও আমরাইলছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ জনবসতি-যেখানে নিত্য দিনের জীবন চলে নদীর ওপার-এপার ঘুরে।

প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। বৃষ্টির দিনে সাঁকো পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়। প্রায়শই শিক্ষার্থী ও পথচারীরা পড়ে আহত হন। এ কারণে অনেক অভিভাবক সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

৪ যুগ ধরে এলাকাবাসী সেতুর দাবি জানিয়ে আসলেও মন্ত্রী, এমপি থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসের বাণী ছাড়া উদনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের কোনো পদক্ষেপ এখনো নেয়া হয়নি। এ দাবি জানাতে জানাতে অনেকেই কিশোর থেকে যৌবন পার করে বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। অর্ধশত বছরের প্রতীক্ষার পরও সেতু না হওয়ায় সরকারের উদাসীনতায় ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।

ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে পারাপারই সিন্দুরখাঁন ইউনিয়নের নিত্যদিনের বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনবাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হয় কয়েক হাজার মানুষ। সেতু না থাকায় শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, এমনকি রোগী পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সবাইকে। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও প্রসূতি মা রোগীদের নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া যেন এক জেনেশুনে এক ভয়াবহ যাত্রাপথ। উন্নয়নের ছোঁয়া যখন দেশের সর্বত্র, তখনও একটি সেতুর অভাবে থেমে আছে এই জনপদের অগ্রযাত্রা।

উপজেলার সিন্দুরখাঁন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াছিন আরাফাত রবিন জানান, যেহেতু এটা দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের অধিনে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসলে আমরা ব্রীজ নির্মাণের জন্য দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ে আবেদন পাঠাবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইসলাম উদ্দিন বলেন, স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় সেতু নির্মাণ জরুরি। দ্রুত সময়ের মধ্যে উদনা নদীর ওপর সেতুর প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

এলাকাবাসীর আকাঙ্ক্ষা উদনা নদীর ওপর স্বপ্নের সেতু, যা বদলে দিতে পারে দীর্ঘ প্রতীক্ষার প্রতিটি নাগরিকের দিন, জীবনাযাত্রা, শিক্ষা ও স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।