ঢাকা , শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৎ বোনকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করায় ভাই ভাবি কারাগারে

কসবা প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : ১০:৩০:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৬২ বার পড়া হয়েছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় ১২ বছরের সৎ বোনকে দিয়ে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসায় বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে সৎ ভাই ভাবির বিরুদ্ধে। এ বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর পিতা মোশারফ হোসেন মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বাদী হয়ে কসবা থানায় পাঁচজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

পরে ওইদিনই সন্ধ্যায় ছেলে সোলেমান মিয়া (৪০) ও পুত্রবধূ সেলিনা আক্তারকে (৩০) কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

কসবা থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ ও কিশোরীর পিতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোশারফ হোসেন দুটি বিবাহ করেছেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান ওই ভুক্তভোগী কিশোরী। প্রথম স্ত্রীর সংসারে সোলেমান মিয়া নামে তার এক ছেলে রয়েছে। তিনি কসবা সুপার মার্কেটের সামনে ফুটপাতে চায়ের দোকান চালান ও শহরের শীতল পাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। দুই মাস আগে ছেলে সোলেমান হঠাৎ করে গ্রামের বাড়ি গিয়ে তার সৎ ছোট বোনকে শহরের বাসায় নিয়ে আসে।

তখন জানানো হয়, ছোট বোনকে লেখাপড়া করানোসহ বিয়ে দেওয়ার সব ব্যবস্থা করবে। বাবা সরল বিশ্বাসে বড় ছেলের সঙ্গে মেয়েকে তার বাসায় পাঠিয়ে দেয়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার সময় কিশোরী গ্রামের বাড়ি হরিপুরে বাবার কাছে চলে যায়। এত রাতে একা চলে আসার কারণ জানতে চাইলে সে তখন কিছুই বলেনি।
পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি সোলায়মান আবার তার সৎ বোনকে আনতে গ্রামের বাড়ি যায়। তখন কিশোরী ভাইয়ের সঙ্গে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় কারণ জানতে চাইলে সে জানায়, গত দু’মাস ধরে ওই বাসায় রাতের বেলায় বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে তাকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হয়েছে। সে এসব কাজ করতে রাজি না হলে তাকে মারধর করা হতো। তাই সে রাতের আঁধারে পালিয়ে বাড়িতে চলে এসেছে।
পরে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার শরীরে মারধরের চিহ্ন পাওয়া যায়। মঙ্গলবার বিকেলে থানায় এসে ছেলে ও বউসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
শিশুর পিতা মোশারফ হোসেন আরও জানান, ভাই ভাবি হয়ে ছোট বোনের এমন সর্বনাশ করবে আমি ভাবতেও পারিনি। পরিবারে অভাব-অনটনের কারণে সরল বিশ্বাসে ছেলের বাসায় পাঠিয়েছিলাম।
কসবা থানার ওসি রাজু আহাম্মেদ জানান, কিশোরীটির পিতার অভিযোগের ভিত্তিতে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার ডাক্তারি পরীক্ষা প্রক্রিয়াধীন।

ট্যাগস :

এই নিউজটি শেয়ার করুন

x

সৎ বোনকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করায় ভাই ভাবি কারাগারে

প্রকাশের সময় : ১০:৩০:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় ১২ বছরের সৎ বোনকে দিয়ে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসায় বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে সৎ ভাই ভাবির বিরুদ্ধে। এ বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর পিতা মোশারফ হোসেন মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বাদী হয়ে কসবা থানায় পাঁচজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

পরে ওইদিনই সন্ধ্যায় ছেলে সোলেমান মিয়া (৪০) ও পুত্রবধূ সেলিনা আক্তারকে (৩০) কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

কসবা থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ ও কিশোরীর পিতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোশারফ হোসেন দুটি বিবাহ করেছেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান ওই ভুক্তভোগী কিশোরী। প্রথম স্ত্রীর সংসারে সোলেমান মিয়া নামে তার এক ছেলে রয়েছে। তিনি কসবা সুপার মার্কেটের সামনে ফুটপাতে চায়ের দোকান চালান ও শহরের শীতল পাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। দুই মাস আগে ছেলে সোলেমান হঠাৎ করে গ্রামের বাড়ি গিয়ে তার সৎ ছোট বোনকে শহরের বাসায় নিয়ে আসে।

তখন জানানো হয়, ছোট বোনকে লেখাপড়া করানোসহ বিয়ে দেওয়ার সব ব্যবস্থা করবে। বাবা সরল বিশ্বাসে বড় ছেলের সঙ্গে মেয়েকে তার বাসায় পাঠিয়ে দেয়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার সময় কিশোরী গ্রামের বাড়ি হরিপুরে বাবার কাছে চলে যায়। এত রাতে একা চলে আসার কারণ জানতে চাইলে সে তখন কিছুই বলেনি।
পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি সোলায়মান আবার তার সৎ বোনকে আনতে গ্রামের বাড়ি যায়। তখন কিশোরী ভাইয়ের সঙ্গে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় কারণ জানতে চাইলে সে জানায়, গত দু’মাস ধরে ওই বাসায় রাতের বেলায় বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে তাকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হয়েছে। সে এসব কাজ করতে রাজি না হলে তাকে মারধর করা হতো। তাই সে রাতের আঁধারে পালিয়ে বাড়িতে চলে এসেছে।
পরে শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার শরীরে মারধরের চিহ্ন পাওয়া যায়। মঙ্গলবার বিকেলে থানায় এসে ছেলে ও বউসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
শিশুর পিতা মোশারফ হোসেন আরও জানান, ভাই ভাবি হয়ে ছোট বোনের এমন সর্বনাশ করবে আমি ভাবতেও পারিনি। পরিবারে অভাব-অনটনের কারণে সরল বিশ্বাসে ছেলের বাসায় পাঠিয়েছিলাম।
কসবা থানার ওসি রাজু আহাম্মেদ জানান, কিশোরীটির পিতার অভিযোগের ভিত্তিতে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার ডাক্তারি পরীক্ষা প্রক্রিয়াধীন।