ঢাকা , বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একহাতে ভড় করে কামরুল বিবিএ পাস

প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশের সময় : ০১:৩৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩
  • / ৯৯ বার পড়া হয়েছে

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

অদম্য এক কামরুল হাসান। জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। দেহে আছে শুধু বাম হাত। নেই দুই পা। তবুও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর প্রবল ইচ্ছাশক্তি তার। তবে ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় আগ্রহী ছিলেন তিনি। ওই ইচ্ছা শক্তিতে এক হাত দিয়েই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন তিনি। ইচ্ছাশক্তির জোরেই সিলেটের মদন মোহন কলেজ থেকে ২০২০ সালে কামরুল বিবিএ পাস করেন তিনি। এর আগে এসএসসি ও এইচএসসিতেও সফলতার স্বাক্ষর রাখেন তিনি। চলতি শিক্ষাবর্ষে ওই একই কলেজ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশ নেবেন তিনি।
জীবনযুদ্ধে অদম্য কামরুল হাসান মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার দূরবর্তী চেলারচক গ্রামের বাহার আলীর ছেলে। ইচ্ছে শক্তির কাছে হার না মানা কামরুল নিজেকে স্বাভাবিক মানুষই মনে করেন। শক্ত মনোবল নিয়েই চলাফেরা করেন তিনি। খেলেন ব্যাডমিন্টন, ক্যারাম ও ক্রিকেটসহ বিভিন্ন খেলা।
কামরুল হাসান বলেন, ইচ্ছা শক্তি আমাকে অনেক দূর এগিয়েছে। শত প্রতিবন্ধকতা আমাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। আমি সবকিছু স্বাভাবিক মনে করে মনের প্রবল জোর অদম্য ইচ্ছা নিয়ে চলাফেরা করি। মা-বাবার বড় ছেলে আমি। পঙ্গুত্বের অভিশাপ দমাতে না পারলেও বেকারত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়ানো বড়ই কষ্টের। প্রতিবন্ধী হিসেবে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরে আমার যোগ্যতা অনুযায়ী একটা চাকরি চাই।
কামরুলের মা রছনা বেগম বলেন, আমার ছেলে জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় আগ্রহী ছিল সে। সেই আগ্রহ থেকে এখন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছে একান্ত মনোবলের কারণে। একটা চাকরি হলেই ছেলের ও আমার কষ্ট সফল হবে। আমার ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে। কামরুল সবার বড়। সংসারের দায়িত্ব এখন তার ওপর।
কামরুলের বন্ধু সৌরভ বলেন, কামরুল এক হাত দিয়ে বল করতে পারে, ব্যাটিংয়েও কম নয়। ক্যারাম ও ব্যাডমিন্টনসহ অন্যান্য খেলাও খেলতে পারে সে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি রকিব আলী বলেন, প্রতিবন্ধীদের মাঝে এমন উদ্যোম খুব কমই দেখা যায় এখনকার দিনে। কামরুল আমার এলাকার অন্যরকম এক উদাহরণ। ছেলেটা অনেক ভালো। সে পারতো ভিক্ষাবৃত্তি করতে। কিন্তু তা না করে সে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে এগিয়ে আসার প্রত্যাশা করছি। একটু সুদৃষ্টি পারে কামরুলের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতের দিন গুলো সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে।

ট্যাগস :

এই নিউজটি শেয়ার করুন

x

একহাতে ভড় করে কামরুল বিবিএ পাস

প্রকাশের সময় : ০১:৩৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

অদম্য এক কামরুল হাসান। জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। দেহে আছে শুধু বাম হাত। নেই দুই পা। তবুও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর প্রবল ইচ্ছাশক্তি তার। তবে ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় আগ্রহী ছিলেন তিনি। ওই ইচ্ছা শক্তিতে এক হাত দিয়েই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন তিনি। ইচ্ছাশক্তির জোরেই সিলেটের মদন মোহন কলেজ থেকে ২০২০ সালে কামরুল বিবিএ পাস করেন তিনি। এর আগে এসএসসি ও এইচএসসিতেও সফলতার স্বাক্ষর রাখেন তিনি। চলতি শিক্ষাবর্ষে ওই একই কলেজ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশ নেবেন তিনি।
জীবনযুদ্ধে অদম্য কামরুল হাসান মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার দূরবর্তী চেলারচক গ্রামের বাহার আলীর ছেলে। ইচ্ছে শক্তির কাছে হার না মানা কামরুল নিজেকে স্বাভাবিক মানুষই মনে করেন। শক্ত মনোবল নিয়েই চলাফেরা করেন তিনি। খেলেন ব্যাডমিন্টন, ক্যারাম ও ক্রিকেটসহ বিভিন্ন খেলা।
কামরুল হাসান বলেন, ইচ্ছা শক্তি আমাকে অনেক দূর এগিয়েছে। শত প্রতিবন্ধকতা আমাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। আমি সবকিছু স্বাভাবিক মনে করে মনের প্রবল জোর অদম্য ইচ্ছা নিয়ে চলাফেরা করি। মা-বাবার বড় ছেলে আমি। পঙ্গুত্বের অভিশাপ দমাতে না পারলেও বেকারত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়ানো বড়ই কষ্টের। প্রতিবন্ধী হিসেবে সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরে আমার যোগ্যতা অনুযায়ী একটা চাকরি চাই।
কামরুলের মা রছনা বেগম বলেন, আমার ছেলে জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় আগ্রহী ছিল সে। সেই আগ্রহ থেকে এখন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছে একান্ত মনোবলের কারণে। একটা চাকরি হলেই ছেলের ও আমার কষ্ট সফল হবে। আমার ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে। কামরুল সবার বড়। সংসারের দায়িত্ব এখন তার ওপর।
কামরুলের বন্ধু সৌরভ বলেন, কামরুল এক হাত দিয়ে বল করতে পারে, ব্যাটিংয়েও কম নয়। ক্যারাম ও ব্যাডমিন্টনসহ অন্যান্য খেলাও খেলতে পারে সে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি রকিব আলী বলেন, প্রতিবন্ধীদের মাঝে এমন উদ্যোম খুব কমই দেখা যায় এখনকার দিনে। কামরুল আমার এলাকার অন্যরকম এক উদাহরণ। ছেলেটা অনেক ভালো। সে পারতো ভিক্ষাবৃত্তি করতে। কিন্তু তা না করে সে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে এগিয়ে আসার প্রত্যাশা করছি। একটু সুদৃষ্টি পারে কামরুলের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতের দিন গুলো সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে।