কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম রাতে চালাতেন ট্যাক্সি
- প্রকাশের সময় : ০১:৪৯:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ অক্টোবর ২০২২
- / ৮৬৬ বার পড়া হয়েছে
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, প্রতিদিনের পোস্ট || কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম রাতে চালাতেন ট্যাক্সি।
জন্মের ছয় মাস আগে হারিয়েছিলেন বাবাকে। মা আর বড় ভাইকে নিয়ে চলছিল সংসার। কিন্তু অভাবের তাড়নায় ৮ম শ্রেণিতে ওঠার পর ভাই তাকে চাষাবাদ করতে বলেন। তাই মায়ের অনুমতি নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে যান কোটচাঁদপুরের এক শিক্ষকের বাড়িতে। সেখানে লজিং থেকে চলছিল পড়ালেখা। পাশাপাশি তাদের কৃষি কাজও করতে হয়েছিল তাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাকরি জীবনের শেষ কর্মদিবসে বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য বিদায়ী মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম শৈশব-কৈশোর জীবনের গল্প বলতে গিয়ে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) জানান এসব সংগ্রামী কাহিনী।
তিনি জানান, ঢাকায় এসে ভর্তি হন তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে যা আজকের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। সেখান পড়ার সময় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতে একটি বাসা ভাড়া করে থাকতেন। টিউশনির ৩০ টাকা বেতনে কোনো মতে ঢাকায় টিকে থাকার সংগ্রাম চলছিল।
ঢাকা থেকে প্রতিদিন মুড়ির টিনে (যাত্রীবাহী বাস) করে বাসায় যাওয়া আসায় সময় লাগতো প্রায় দেড় থেকে পৌনে দুই ঘণ্টা। ফলে রেললাইন ধরে পায়ে হেঁটে আড়াই বছর দেড় ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে ফতুল্লায় যাতায়াত করতেন বলে জানান তিনি ।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম টিউশনি না করে বিকল্প হিসেবে রাতে বেবি ট্যাক্সি চালাবো। তাই করেছি। পরে একবার দুর্ঘটনা শিকার হয়ে এটি চালানো বাদ দিলাম। যার জীবনে কোনো স্ট্রাগল নেই, সেটা জীবনই না।
মো. সিরাজুল ইসলাম ২০১৮ সালের ২২ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসরে যান। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই কর্মকর্তা ১৯৮৮ সালে সহকারী পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দেন। প্রায় ৩৪ বছরের চাকরি জীবনে তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ, এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট, ইইএফ ইউনিট, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে রংপুর ও সিলেট অফিসে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকালে তিনি ভারত, বেলজিয়াম ও পাকিস্তানে সফর করেন।
এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ন বেআইনী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সারা/প্রতিদিনের পোস্ট