ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বিজয়নগর উপজেলা নাগরিক ফোরামের আয়োজন ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বিজয়নগরে লিচু বাগানে গাছের নিচে বস্তাভর্তি গাঁজা উদ্ধার নবীনগরে পুকুরে ডুবে দুই চাচাতো বোনের প্রাণ গেল ২৫ ইঞ্চি জীবিত কেঁচো মিললো পেটে বিভাগীয় ইনোভেশন শোকেসিংয়ে নবীনগর উপজেলা দ্বিতীয় কুলাউড়ায় স্ত্রী’কে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী কারাগারে দাম কমিয়ে ৫৯৫ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির ঘোষণা দিলেন খলিল মনোহরদীতে হাফেজ ছাত্রদের হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বেলাবতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় শ্রীমঙ্গলে সরকারী জমি দখলের প্রতিবাদ করায় এলাকাবাসীর ওপর চাঁদাবাজির মামলা; সাংবাদিকদের ওপর চড়াও ডলি

“নিজের বাল্যবিয়ে রুখে দেওয়া সেই সাহসী কন্যা জিপিএ-৫ পেয়েছে”

  • রিপু
  • প্রকাশের সময় : ০৫:০৯:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২
  • ১৩৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিদিনের পোস্ট || নিনিজের বাল্যবিয়ে রুখে দেওয়া সেই সাহসী কন্যা জিপিএ-৫ পেয়েছে|

চুয়াডাঙ্গায় নিজের বাল্যবিয়ে রুখে দেওয়া সেই ‘সাহসী কন্যা’ উপাধিপ্রাপ্ত বর্ষা (১৬) এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে চুয়াডাঙ্গা ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।

সোমবার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল বের হলে এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, শ্রাবন্তী সুলতানা বর্ষার (১৬) বাবা ইকতার উদ্দিনের সঙ্গে মা বিউটি খাতুনের বিচ্ছেদ হয়েছে অনেক আগেই। তার মা স্থানীয় একটি সেমাই মিলে কাজ করে সংসার চালান। টানাটানির সংসার তাই দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় বর্ষার মামা-খালারা জোর করে তার বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। মায়ের পক্ষে মেয়ের বিয়ে ঠেকানোর উপায় ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে বর্ষা সদর থানায় যায় এবং ওসি মোহাম্মদ মহসীনকে বিস্তারিত জানালে তারা বিয়ে বন্ধ করে দেন।

এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে বর্ষা জানায়, আজ দুপুরে রেজাল্ট পাওয়ার পর এত খুশি হয়েছি যে বলার ভাষা আমার নেই। অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করে আজ এ পর্যন্ত এসেছি। বাবা থেকেও নেই, অনেক সংগ্রাম করেছি। মা সেমাই মিলে কাজ করার সুবাদে এখনো জানেন না আমার রেজাল্টের খবর। কাজ শেষে রাতে বাড়িতে ফিরলে জানতে পারবেন। আমার থেকেও বেশি খুশি হবেন তিনি।

বর্ষা জানায়, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জোর করে মামা-খালারা আমার আমার বিয়ে ঠিক করেন। তাদের জোরাজুরিতে আমার মা অসহায় ছিলেন। যাদের বাল্যবিবাহ হয়েছে, তাদের কেউ সুখে-শান্তিতে নেই। পড়াশোনা শিখে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করতে চাই। তাই বাধ্য হয়ে আমি চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় গিয়ে ওসি মহসীনকে জানালে তিনি এসে বিয়ে বন্ধ করে দেন। পড়াশোনার জন্য আমাকে সহযোগিতা করেন তিনি। আমি দুজন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়েছি। তারা আমার কাছ থেকে ফি নেননি। বড় ভাই হাসানুল হোসেন মাসখানেক আগে সংসারের হাল ধরতে সৌদি আরব গেছেন। এবার এইচএসসি ভর্তির খরচ জেলা প্রশাসন থেকে বহন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ইচ্ছা আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার।

তৎকালীন চুয়াডাঙ্গা সদর থানা এবং বর্তমান ঢাকা উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, বর্ষাকে অভিনন্দন জানিয়েছি। তাকে এখনো ভুলিনি। বাল্যবিয়ে বন্ধে থানায় আসার জন্য অনেকে সমালোচনা করেছিল। এটা হলো সেই সমালোচকদের জবাব।

স্কুলছাত্রী বর্ষাকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জাতীয় কন্যা শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাকে ‘সাহসী কন্যা’ উপাধি দেওয়া হয়

এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ । রিপু /প্রতিদিনের পোস্ট

Facebook Comments Box
জনপ্রিয়

বিজয়নগর উপজেলা নাগরিক ফোরামের আয়োজন ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

“নিজের বাল্যবিয়ে রুখে দেওয়া সেই সাহসী কন্যা জিপিএ-৫ পেয়েছে”

প্রকাশের সময় : ০৫:০৯:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিদিনের পোস্ট || নিনিজের বাল্যবিয়ে রুখে দেওয়া সেই সাহসী কন্যা জিপিএ-৫ পেয়েছে|

চুয়াডাঙ্গায় নিজের বাল্যবিয়ে রুখে দেওয়া সেই ‘সাহসী কন্যা’ উপাধিপ্রাপ্ত বর্ষা (১৬) এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে চুয়াডাঙ্গা ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।

সোমবার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল বের হলে এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, শ্রাবন্তী সুলতানা বর্ষার (১৬) বাবা ইকতার উদ্দিনের সঙ্গে মা বিউটি খাতুনের বিচ্ছেদ হয়েছে অনেক আগেই। তার মা স্থানীয় একটি সেমাই মিলে কাজ করে সংসার চালান। টানাটানির সংসার তাই দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় বর্ষার মামা-খালারা জোর করে তার বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। মায়ের পক্ষে মেয়ের বিয়ে ঠেকানোর উপায় ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে বর্ষা সদর থানায় যায় এবং ওসি মোহাম্মদ মহসীনকে বিস্তারিত জানালে তারা বিয়ে বন্ধ করে দেন।

এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে বর্ষা জানায়, আজ দুপুরে রেজাল্ট পাওয়ার পর এত খুশি হয়েছি যে বলার ভাষা আমার নেই। অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করে আজ এ পর্যন্ত এসেছি। বাবা থেকেও নেই, অনেক সংগ্রাম করেছি। মা সেমাই মিলে কাজ করার সুবাদে এখনো জানেন না আমার রেজাল্টের খবর। কাজ শেষে রাতে বাড়িতে ফিরলে জানতে পারবেন। আমার থেকেও বেশি খুশি হবেন তিনি।

বর্ষা জানায়, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জোর করে মামা-খালারা আমার আমার বিয়ে ঠিক করেন। তাদের জোরাজুরিতে আমার মা অসহায় ছিলেন। যাদের বাল্যবিবাহ হয়েছে, তাদের কেউ সুখে-শান্তিতে নেই। পড়াশোনা শিখে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বিয়ে করতে চাই। তাই বাধ্য হয়ে আমি চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় গিয়ে ওসি মহসীনকে জানালে তিনি এসে বিয়ে বন্ধ করে দেন। পড়াশোনার জন্য আমাকে সহযোগিতা করেন তিনি। আমি দুজন শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়েছি। তারা আমার কাছ থেকে ফি নেননি। বড় ভাই হাসানুল হোসেন মাসখানেক আগে সংসারের হাল ধরতে সৌদি আরব গেছেন। এবার এইচএসসি ভর্তির খরচ জেলা প্রশাসন থেকে বহন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ইচ্ছা আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার।

তৎকালীন চুয়াডাঙ্গা সদর থানা এবং বর্তমান ঢাকা উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, বর্ষাকে অভিনন্দন জানিয়েছি। তাকে এখনো ভুলিনি। বাল্যবিয়ে বন্ধে থানায় আসার জন্য অনেকে সমালোচনা করেছিল। এটা হলো সেই সমালোচকদের জবাব।

স্কুলছাত্রী বর্ষাকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন ও জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জাতীয় কন্যা শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাকে ‘সাহসী কন্যা’ উপাধি দেওয়া হয়

এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ । রিপু /প্রতিদিনের পোস্ট

Facebook Comments Box