ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে মৌলভীবাজারে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত দেশের নির্বাচন নির্বাসনে চলে গেছে; নাসের রহমান বাংলাদেশ উদাচী শিল্পীগোষ্ঠী বেলাব থানা শাখার আয়োজনে বাংলা নববর্ষ পালিত ওয়েবসাইট তৈরিতে ৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে খন্দকার আইটি বেড়াতে এসে প্রবাসে ফেরা হলো না ফাহমিদার পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গলে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত বাসকপ নবীনগর শাখার উদ্যোগে আলোচনাসভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মৃত ব্যক্তিদের মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রয়াত সাংবাদিকদের স্বরণে আলোচনা সভা, ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হাল্টপ্রাইজ বোস্টন সামিটে যাবে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

প্রতিকূল আবহাওয়ায় চা উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রায় শঙ্কা

প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশের সময় : ১০:০৩:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মার্চ ২০২৩
  • / ২০৬ বার পড়া হয়েছে

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

সিলেটের চা-বাগানগুলোতে চলছে তীব্র খরা। পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে রেড স্পাইডারসহ নানা ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে চলতি বছরের চা উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়েই শঙ্কা তৈরি হয়েছে।গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বৃষ্টি না হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত সপ্তাহে সিলেটে ২৫-৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও মৌলভীবাজার, কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল এলাকার বাগানগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ।গত দুই দিন বৃষ্টি হলেও ‘চা-বাগানগুলোর জন্য এটা কিছুই নয়’—এমন মন্তব্য করেছেন একজন বাগান ম্যানেজার। কমলগঞ্জের ফুলবাড়ি টি-এস্টেটের জি এম লুত্ফর রহমান চৌধুরী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইত্তেফাককে বলেন, আকাশের মেঘ আছে, কিন্তু বৃষ্টি নেই। দুপুরেও প্রচণ্ড তাপমাত্রা ছিল।’ এই অবস্থায় তার বাগানে এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৭ লাখ ৩০ হাজার কেজি কীভাবে অর্জিত হবে—তা নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায় আছেন।বাগান সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে মারাত্মক খরার মধ্যে চা-বাগানগুলো। অথচ বাগানগুলো এখন সবুজে ঢাকা থাকার কথা। কিন্তু ধুলায় ধূসরিত। পাতা ছাড়ছে না চা-গাছগুলো।সিলেটের ‘হবিবপুর বাগান’-এর ব্যবস্থাপক হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘চা একটি সংবেদনশীল কৃষিপণ্য। এজন্য প্রয়োজন সুষম আবহাওয়া, সঠিক পরিচর্যা। কিন্তু এবার আবহাওয়া বেশ এলোমেলো।’ গত বুধ, বৃহস্পতিবার দুই দিনের বৃষ্টিতে হাবিবপুর বাগানে কিছুটা সজীবতা এসেছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি এখনো অনুকূল নয়। চট্টগ্রামের অবস্থা আরও বৈরী। সারা দেশের ১৬৭টি চা-বাগানের মধ্যে সিলেটেই ১৩৬টি রয়েছে। বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের নর্থ সিলেট ভ্যালির চেয়ারম্যান নোমান হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘এখন খুব বাজে অবস্থা যাচ্ছে। বৃষ্টির দেখা নেই।’ তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা প্রোনিং (চা-গাছ ছেঁটে দেওয়া) শেষ করেছি, খাল, লেবার শেড ইত্যাদি সংস্কার হয়েছে।’তিনি বলেন, বৃষ্টি হলে চা-গাছ কুড়ি ছাড়বে। আর মার্চের প্রথম সপ্তাহে ‘চা চয়ন’ (পাতি তোলা) শুরু হবে। সিলেট, শ্রীমঙ্গল, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের চা-বাগানের ব্যবস্থাপক, শ্রমিক ও মালিক এখন বৃষ্টির জন্য চাতকের মতো চেয়ে আছেন।২০২৩ সালে দেশে চা উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ১০০ মিলিয়ন কেজির বেশি। ২০২২ সালেও লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০০ মিলিয়ন কেজি। বন্যা ও চা শ্রমিকদের আন্দোলনসহ নানা কারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। তাই এ বছর অনেক আশা নিয়ে বাগান সংশ্লিষ্টরা উৎপাদনে নামেন। কিন্তু খরার কারণে সমস্যা দেখা দিয়েছে।অন্যদিকে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। এর মধ্যে ১৩০ মিলিয়ন কেজি চা দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণ করা হবে এবং বাকি ১০ মিলিয়ন কেজি চা বিদেশে রপ্তানি করা হবে। এমনি সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের (বিটিবি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম। সূত্র জানায়, হবিগঞ্জের লস্করপুর ভ্যালিতে চায়ের উৎপাদন কমেছে। গত বছরের প্রথমার্ধে অনাবৃষ্টি ও বছরের শেষ দিকে গত আগস্টে চা-শ্রমিক ধর্মঘটকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে নতুন বছরে অনুকূল আবহাওয়া থাকলে চায়ের উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করছেন তারা।

ট্যাগস :

এই নিউজটি শেয়ার করুন

x

প্রতিকূল আবহাওয়ায় চা উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রায় শঙ্কা

প্রকাশের সময় : ১০:০৩:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মার্চ ২০২৩

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

সিলেটের চা-বাগানগুলোতে চলছে তীব্র খরা। পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে রেড স্পাইডারসহ নানা ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে চলতি বছরের চা উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়েই শঙ্কা তৈরি হয়েছে।গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বৃষ্টি না হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত সপ্তাহে সিলেটে ২৫-৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও মৌলভীবাজার, কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল এলাকার বাগানগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ।গত দুই দিন বৃষ্টি হলেও ‘চা-বাগানগুলোর জন্য এটা কিছুই নয়’—এমন মন্তব্য করেছেন একজন বাগান ম্যানেজার। কমলগঞ্জের ফুলবাড়ি টি-এস্টেটের জি এম লুত্ফর রহমান চৌধুরী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইত্তেফাককে বলেন, আকাশের মেঘ আছে, কিন্তু বৃষ্টি নেই। দুপুরেও প্রচণ্ড তাপমাত্রা ছিল।’ এই অবস্থায় তার বাগানে এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৭ লাখ ৩০ হাজার কেজি কীভাবে অর্জিত হবে—তা নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায় আছেন।বাগান সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে মারাত্মক খরার মধ্যে চা-বাগানগুলো। অথচ বাগানগুলো এখন সবুজে ঢাকা থাকার কথা। কিন্তু ধুলায় ধূসরিত। পাতা ছাড়ছে না চা-গাছগুলো।সিলেটের ‘হবিবপুর বাগান’-এর ব্যবস্থাপক হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘চা একটি সংবেদনশীল কৃষিপণ্য। এজন্য প্রয়োজন সুষম আবহাওয়া, সঠিক পরিচর্যা। কিন্তু এবার আবহাওয়া বেশ এলোমেলো।’ গত বুধ, বৃহস্পতিবার দুই দিনের বৃষ্টিতে হাবিবপুর বাগানে কিছুটা সজীবতা এসেছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি এখনো অনুকূল নয়। চট্টগ্রামের অবস্থা আরও বৈরী। সারা দেশের ১৬৭টি চা-বাগানের মধ্যে সিলেটেই ১৩৬টি রয়েছে। বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের নর্থ সিলেট ভ্যালির চেয়ারম্যান নোমান হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘এখন খুব বাজে অবস্থা যাচ্ছে। বৃষ্টির দেখা নেই।’ তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা প্রোনিং (চা-গাছ ছেঁটে দেওয়া) শেষ করেছি, খাল, লেবার শেড ইত্যাদি সংস্কার হয়েছে।’তিনি বলেন, বৃষ্টি হলে চা-গাছ কুড়ি ছাড়বে। আর মার্চের প্রথম সপ্তাহে ‘চা চয়ন’ (পাতি তোলা) শুরু হবে। সিলেট, শ্রীমঙ্গল, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের চা-বাগানের ব্যবস্থাপক, শ্রমিক ও মালিক এখন বৃষ্টির জন্য চাতকের মতো চেয়ে আছেন।২০২৩ সালে দেশে চা উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ১০০ মিলিয়ন কেজির বেশি। ২০২২ সালেও লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০০ মিলিয়ন কেজি। বন্যা ও চা শ্রমিকদের আন্দোলনসহ নানা কারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। তাই এ বছর অনেক আশা নিয়ে বাগান সংশ্লিষ্টরা উৎপাদনে নামেন। কিন্তু খরার কারণে সমস্যা দেখা দিয়েছে।অন্যদিকে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। এর মধ্যে ১৩০ মিলিয়ন কেজি চা দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণ করা হবে এবং বাকি ১০ মিলিয়ন কেজি চা বিদেশে রপ্তানি করা হবে। এমনি সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের (বিটিবি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম। সূত্র জানায়, হবিগঞ্জের লস্করপুর ভ্যালিতে চায়ের উৎপাদন কমেছে। গত বছরের প্রথমার্ধে অনাবৃষ্টি ও বছরের শেষ দিকে গত আগস্টে চা-শ্রমিক ধর্মঘটকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে নতুন বছরে অনুকূল আবহাওয়া থাকলে চায়ের উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করছেন তারা।