ঢাকা , মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্পেশাল ইনিংস খেলে ফেলেছেন শান্ত

প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৩১:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২২
  • / ১৮৭ বার পড়া হয়েছে

 স্পোর্টস ডেস্ক || স্পেশাল ইনিংস খেলে ফেলেছেন শান্ত।

বাংলাদেশ ক্রিকেটে কিছু নাম আছে যাদের নিয়ে প্রত্যাশার বেলুন চুপসে গেছে অনেক আগেই। এখন আর তাদের নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা উচ্ছ্বসিত হয় না। বরং সোশ্যাল মিডিয়াতে তারা ট্রলের স্বীকার হন বারবারই। তারপরও তাদের অনেকের ওপরই একটা ছায়া হয়ে থাকেন নির্বাচকরা। ক্রিকেট বোর্ডও বড় উদার তাদের জন্য। সেই তালিকায় উপরের সারিতেই থাকে নাজমুল হোসেন শান্তর নাম! কিছুতেই কিছু করতে পারছিলেন না তিনি। তারপরও একটা ঝুঁকি নিয়েই নির্বাচকরা বিশ্বকাপের দলে রেখেছিলেন এই ওপেনারকে!

কথায় আছে ঝুঁকি নিলে নাকি সফলতাও মেলে। সেটাই তো প্রমাণ হলো রোববার, ব্রিসবেনের বিখ্যাত গ্যাবা স্টেডিয়ামে। শান্ত খেললেন নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া এক ইনিংস। আগের ১৪ টি-টোয়েন্টিতে যেখানে মিলছিল না একটাও ফিফটি। এবার সেটিও মিলল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দল যখন ‘জয় চাই, জয় চাই’ বলে হাহাকার করছে তখনই কি-না খেলে ফেললেন নিজের সেরা ইনিংস! তার ব্যাটেই তো লেখা হলো রোমাঞ্চকর এক জয়ের কাব্য।

গ্যাবায় শেষ ওভারের রুদ্ধশ্বাসে জিম্বাবুয়েকে ৩ রানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালের সম্ভাবনা টিকিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। এমন একটা জয়ের নায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত! তাইতো অনেক অনেক দিন পর হাসিমুখে তিনি গণমাধ্যমের সামনে। গ্যাবার প্রেস কনফারেন্স রুমে বসে তার চোখ-মুখ থেকে ঠিকরে পড়ছিল-খুশির ঝিলিক!

জানিয়ে দিলেন এই ইনিংসটা তার কাছে স্পেশাল। ৫৫ বলে ৭১ রানের আলো ছড়ানো ইনিংসের পর বলছিলেন, ‘অবশ্যই আমার জন্য এটা একটু স্পেশাল, এটা আমার প্রথম অর্ধ-শতক ছিল। যে জিনিসটা ছিল আমার বেশ কয়েকটা ইনিংস আমার শুরু হচ্ছিল কিন্তু বড় করতে পারছিলাম না। কিন্তু আজকে যে জিনিসটা ছিল যে সেই কমিটমেন্টটা ছিল আমার মধ্যে, যে আমি যদি সেট হয় তাহলে যত বড় করা যায়। তো করতে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ।’

এমন একটা ইনিংসে আত্মবিশ্বাসটাও আকাশ ছুঁয়ে যায়। দুঃসময় কাটিয়ে ওঠা ইনিংস শেষে শান্ত বললেন, ‘দেখুন, ম্যাচ জিতলে তো অবশ্যই আত্মবিশ্বাস বাড়ে। টিমের পরিবেশ আগে থেকেই ভালো এই ম্যাচটা জেতার কারণে আমাদের মনেহয় সমানের ম্যাচগুলা সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেতে পারব। এই ম্যাচেও আমাদের কিছু জায়গায় আরো উন্নতির প্রয়োজন আছে। সামনের ম্যাচে এই ভুলগুলো যেন কম হয়, এবং ঐই আত্মবিশ্বাস নিয়েই আমরা যাব ইনশাল্লাহ।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় বিশ্বকাপে সেমি-ফাইনালে খেলার সম্ভাবনাটাও টিকিয়ে রেখেছে। তিন ম্যাচ খেলে দুটিতে জয়। সামনে লড়াই অ্যাডিলেডে। যেখানে প্রতিপক্ষ আরও ভয়ঙ্কর পাকিস্তান ও ভারত। সেই দুইম্যোচের আগে সেমি-ফাইনাল ভাবনায় বুঁদ হয়ে থাকতে চাইছেন না শান্ত, ‘দেখুন, এসব আসলে চিন্তা করতে চাই না। ম্যাচ বাই ম্যাচ যেতে চাই। ওটাই চিন্তা আছে যে, পরবর্তী ম্যাচে আমরা কত ভালো খেলতে পারি।’

স্বপ্ন দেখলেই হয় না, সেই স্বপ্নকে পূরণের জন্য লড়ে যেতে হয়। ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে থাকতে হয় অপেক্ষায়। প্রথমে ভারত, তারপর পাকিস্তান এভাবেই এগিয়ে যেতে চায় বাংলাদেশ। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত এখন যতোটা নির্ভার ঠিক ততোটাই নির্ভার আজ থেকে জাতীয় দলের নির্বাচকরা। এই একজন ক্রিকেটারকে দলে রেখে কত না কথা শুনেছেন। এবার বড় মঞ্চে এসে নিজেকে প্রমাণ করে শান্ত বুঝিয়ে দিলেন তিনি কারও দয়ায় নয়, নিজ যোগ্যতাতেই আছেন জাতীয় দলে!

এই নিউজটি শেয়ার করুন

x

স্পেশাল ইনিংস খেলে ফেলেছেন শান্ত

প্রকাশের সময় : ০৮:৩১:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২২

 স্পোর্টস ডেস্ক || স্পেশাল ইনিংস খেলে ফেলেছেন শান্ত।

বাংলাদেশ ক্রিকেটে কিছু নাম আছে যাদের নিয়ে প্রত্যাশার বেলুন চুপসে গেছে অনেক আগেই। এখন আর তাদের নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা উচ্ছ্বসিত হয় না। বরং সোশ্যাল মিডিয়াতে তারা ট্রলের স্বীকার হন বারবারই। তারপরও তাদের অনেকের ওপরই একটা ছায়া হয়ে থাকেন নির্বাচকরা। ক্রিকেট বোর্ডও বড় উদার তাদের জন্য। সেই তালিকায় উপরের সারিতেই থাকে নাজমুল হোসেন শান্তর নাম! কিছুতেই কিছু করতে পারছিলেন না তিনি। তারপরও একটা ঝুঁকি নিয়েই নির্বাচকরা বিশ্বকাপের দলে রেখেছিলেন এই ওপেনারকে!

কথায় আছে ঝুঁকি নিলে নাকি সফলতাও মেলে। সেটাই তো প্রমাণ হলো রোববার, ব্রিসবেনের বিখ্যাত গ্যাবা স্টেডিয়ামে। শান্ত খেললেন নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া এক ইনিংস। আগের ১৪ টি-টোয়েন্টিতে যেখানে মিলছিল না একটাও ফিফটি। এবার সেটিও মিলল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দল যখন ‘জয় চাই, জয় চাই’ বলে হাহাকার করছে তখনই কি-না খেলে ফেললেন নিজের সেরা ইনিংস! তার ব্যাটেই তো লেখা হলো রোমাঞ্চকর এক জয়ের কাব্য।

গ্যাবায় শেষ ওভারের রুদ্ধশ্বাসে জিম্বাবুয়েকে ৩ রানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালের সম্ভাবনা টিকিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। এমন একটা জয়ের নায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত! তাইতো অনেক অনেক দিন পর হাসিমুখে তিনি গণমাধ্যমের সামনে। গ্যাবার প্রেস কনফারেন্স রুমে বসে তার চোখ-মুখ থেকে ঠিকরে পড়ছিল-খুশির ঝিলিক!

জানিয়ে দিলেন এই ইনিংসটা তার কাছে স্পেশাল। ৫৫ বলে ৭১ রানের আলো ছড়ানো ইনিংসের পর বলছিলেন, ‘অবশ্যই আমার জন্য এটা একটু স্পেশাল, এটা আমার প্রথম অর্ধ-শতক ছিল। যে জিনিসটা ছিল আমার বেশ কয়েকটা ইনিংস আমার শুরু হচ্ছিল কিন্তু বড় করতে পারছিলাম না। কিন্তু আজকে যে জিনিসটা ছিল যে সেই কমিটমেন্টটা ছিল আমার মধ্যে, যে আমি যদি সেট হয় তাহলে যত বড় করা যায়। তো করতে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ।’

এমন একটা ইনিংসে আত্মবিশ্বাসটাও আকাশ ছুঁয়ে যায়। দুঃসময় কাটিয়ে ওঠা ইনিংস শেষে শান্ত বললেন, ‘দেখুন, ম্যাচ জিতলে তো অবশ্যই আত্মবিশ্বাস বাড়ে। টিমের পরিবেশ আগে থেকেই ভালো এই ম্যাচটা জেতার কারণে আমাদের মনেহয় সমানের ম্যাচগুলা সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেতে পারব। এই ম্যাচেও আমাদের কিছু জায়গায় আরো উন্নতির প্রয়োজন আছে। সামনের ম্যাচে এই ভুলগুলো যেন কম হয়, এবং ঐই আত্মবিশ্বাস নিয়েই আমরা যাব ইনশাল্লাহ।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় বিশ্বকাপে সেমি-ফাইনালে খেলার সম্ভাবনাটাও টিকিয়ে রেখেছে। তিন ম্যাচ খেলে দুটিতে জয়। সামনে লড়াই অ্যাডিলেডে। যেখানে প্রতিপক্ষ আরও ভয়ঙ্কর পাকিস্তান ও ভারত। সেই দুইম্যোচের আগে সেমি-ফাইনাল ভাবনায় বুঁদ হয়ে থাকতে চাইছেন না শান্ত, ‘দেখুন, এসব আসলে চিন্তা করতে চাই না। ম্যাচ বাই ম্যাচ যেতে চাই। ওটাই চিন্তা আছে যে, পরবর্তী ম্যাচে আমরা কত ভালো খেলতে পারি।’

স্বপ্ন দেখলেই হয় না, সেই স্বপ্নকে পূরণের জন্য লড়ে যেতে হয়। ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা নিয়ে থাকতে হয় অপেক্ষায়। প্রথমে ভারত, তারপর পাকিস্তান এভাবেই এগিয়ে যেতে চায় বাংলাদেশ। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত এখন যতোটা নির্ভার ঠিক ততোটাই নির্ভার আজ থেকে জাতীয় দলের নির্বাচকরা। এই একজন ক্রিকেটারকে দলে রেখে কত না কথা শুনেছেন। এবার বড় মঞ্চে এসে নিজেকে প্রমাণ করে শান্ত বুঝিয়ে দিলেন তিনি কারও দয়ায় নয়, নিজ যোগ্যতাতেই আছেন জাতীয় দলে!