ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বেলাবতে শামছুল হুদা রহমানীয়া মাহমুদীয়া দ্বীনিয়া মাদরাসার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ভয়ে ভীত প্রীতি উরাংয়ের পরিবারও নাগরিক সমাজের সুষ্ঠু তদন্তে বিচার দাবি কালীগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় এক নির্মাণ শ্রমিকের প্রাণ গেল ব্যাংকে টাকা নাই গ্ৰাহক সেবা থেকে বঞ্চিত; হয়রানির শিকার সাধারণ মানুষ মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্টকে জেতাতে কোমর বেঁধেছেন জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি শামসুল হুদা লস্কর কলেজছাত্র মামুন হত্যাকান্ডের প্রধান জুনেদ কারাগারে শ্রীমঙ্গলে অভ্যন্তরীন বোরো ধান সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন;কৃষিমন্ত্রী ‘অনুমতি ছাড়া জন্ম দেয়ায়’ মা-বাবার বিরুদ্ধে মামলা! সুদের চক্রে ফেঁসে বিষপানে জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকার আত্মহত্যা সিএজি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বেলাবতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

নাটোরের সিংড়ায় কুমড়ো বড়ি বানিয়ে স্বাবলম্বী ১০টি পরিবার

মোঃ আব্দুর রব, নাটোর
  • প্রকাশের সময় : ১১:৪৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর ২০২২
  • / ২১১ বার পড়া হয়েছে

মোঃ আব্দুর রব, নাটোর || নাটোরের সিংড়ায় কুমড়ো বড়ি বানিয়ে স্বাবলম্বী ১০টি পরিবার।

ডাল রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় বড়ি। এটি তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার কলম পুন্ডরী গ্রামের প্রায় ১০টি পরিবার। একে পেশা হিসেবে নিয়েছে তারা। আগে শীতকালে এই পণ্যটির বেশি চাহিদা থাকতো। সেই কারণে শুধু শীতকালেই বড়ি তৈরি হতো। সারাদেশে চাহিদা ক্রমশ বেড়েছে। ফলত,পরিবারগুলোর ওপর তাগিদ সৃষ্টি হয়েছে সারাবছরই সরবরাহের।

সরেজমিনে সিংড়া উপজেলার কলম পুন্ডরী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বড়ি তৈরি করে শুকানোর জন্য সারি সারি রোদে দেওয়া। নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও এই কাজ করছেন। এটি তৈরির প্রধান উপকরণ এংকার ডাল, মাষকলাইয়ের ডাল,খেসারির ডাল এবং সামান্য মসলা দিয়ে বানানো হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে প্রতিকেজি মাষকলাই ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। প্রথমে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা ডাল পানিতে ভেজাতে হয়। এরপর মেশিনে ভাঙ্গিয়ে মিশ্রণ তৈরি করা হয়। তারপর মিশ্রণে বড়ির উপকরণ তৈরি হয়। রৌদ্র উজ্জ্বল ফাঁকা স্থান, বাড়ির আঙিনায় খোলা জায়গায় ভোর থেকে তা তৈরির কাজ শুরু হয়। টিন বা পাতলা কাপড়ে সারি সারি এটি রোদে রাখা হয় শুকানোর জন্য। দুই থেকে তিন দিন টানা রোদে শুকাতে হয়। অতপর বিক্রির উপযোগী হয়।

কারিগররা জানান, এই বড়ি দিয়ে বোয়াল, বাইম,কৈ,শিংবা শোল মাছের ঝোল বেশ মুখরোচক ও জনপ্রিয়। এটি বানানোর উপযুক্ত সময় শীতকাল। তবে চাহিদা বাড়ায় এখন সারাবছরই তৈরি করা হচ্ছে। কলম পূন্ডরী গ্রামের নারীরা সারাবছর ব্যস্ত বড়ি বানানোয়। বাড়ির আপন চাহিদা মিটিয়ে এটি হাত বদল হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে।বড়ি তৈরির কারিগর পূন্ডরী গ্রামের রাশেদা বেগম বলেন,৮বছরের অভিজ্ঞতা আমার। মাসে ২০থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হয়। সেটি দিয়ে পরিবার ও নিজের চাহিদা মিটিয়ে থাকি।তিনি আরো জানান, আমাদের দেখে এলাকার ১০টি নারী এই কাজে এখন ব্যস্ত।

শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে তা বানানোর ধুম পড়ে যায়। এখানকার বড়ি সুস্বাদু। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের নাটোর,বগুড়া, রাজশাহী ও ঢাকায় সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এগুলো সরবরাহ করা হয়।বড়ির কারিগর আলামিন শাহ জানান, এই পেশা প্রায় ১৫ বছর ধরে করি। তাই আজও তা করে আসছি। বড়ি মূলত ডাল,মাষকলাই, চালকুমড়া, জিরা, কালোজিরা, মোহরী দিয়ে তৈরি করা হয়। প্রতি কেজি ১২০-১৫০ টাকা করে পাইকারি বিক্রয় করা হয়।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়তই পাইকাররা এসে আমাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে যায়। এছাড়া স্থানীয় বিভিন্ন হাটেও খুচরা বিক্রয় করা হয় এই পণ্য। বগুড়া জেলা থেকে বড়ি কিনতে এসেছেন ব্যবসায়ী মিলটন আলী। তিনি বলেন, এখানকার বড়ি যেমন নরম, তেমনি খেতেও বেশ ভালো লাগে। একবার যে এটি খায়, পরেরবার আবার খুঁজে কিনে নিয়ে যায়। আমার কিছু নিজস্ব খরিদ্দার আছেন, যাদের প্রধান পছন্দ এখানকার বড়ি। অন্য বড়ি কম দামে পাওয়া গেলেও নিতে চান না গ্রাহকরা। তাই বাধ্য হয়ে তাদের জন্য এখান থেকেই নিয়ে যাই।

এই নিউজটি শেয়ার করুন

x

নাটোরের সিংড়ায় কুমড়ো বড়ি বানিয়ে স্বাবলম্বী ১০টি পরিবার

প্রকাশের সময় : ১১:৪৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর ২০২২

মোঃ আব্দুর রব, নাটোর || নাটোরের সিংড়ায় কুমড়ো বড়ি বানিয়ে স্বাবলম্বী ১০টি পরিবার।

ডাল রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় বড়ি। এটি তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার কলম পুন্ডরী গ্রামের প্রায় ১০টি পরিবার। একে পেশা হিসেবে নিয়েছে তারা। আগে শীতকালে এই পণ্যটির বেশি চাহিদা থাকতো। সেই কারণে শুধু শীতকালেই বড়ি তৈরি হতো। সারাদেশে চাহিদা ক্রমশ বেড়েছে। ফলত,পরিবারগুলোর ওপর তাগিদ সৃষ্টি হয়েছে সারাবছরই সরবরাহের।

সরেজমিনে সিংড়া উপজেলার কলম পুন্ডরী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বড়ি তৈরি করে শুকানোর জন্য সারি সারি রোদে দেওয়া। নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও এই কাজ করছেন। এটি তৈরির প্রধান উপকরণ এংকার ডাল, মাষকলাইয়ের ডাল,খেসারির ডাল এবং সামান্য মসলা দিয়ে বানানো হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে প্রতিকেজি মাষকলাই ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। প্রথমে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা ডাল পানিতে ভেজাতে হয়। এরপর মেশিনে ভাঙ্গিয়ে মিশ্রণ তৈরি করা হয়। তারপর মিশ্রণে বড়ির উপকরণ তৈরি হয়। রৌদ্র উজ্জ্বল ফাঁকা স্থান, বাড়ির আঙিনায় খোলা জায়গায় ভোর থেকে তা তৈরির কাজ শুরু হয়। টিন বা পাতলা কাপড়ে সারি সারি এটি রোদে রাখা হয় শুকানোর জন্য। দুই থেকে তিন দিন টানা রোদে শুকাতে হয়। অতপর বিক্রির উপযোগী হয়।

কারিগররা জানান, এই বড়ি দিয়ে বোয়াল, বাইম,কৈ,শিংবা শোল মাছের ঝোল বেশ মুখরোচক ও জনপ্রিয়। এটি বানানোর উপযুক্ত সময় শীতকাল। তবে চাহিদা বাড়ায় এখন সারাবছরই তৈরি করা হচ্ছে। কলম পূন্ডরী গ্রামের নারীরা সারাবছর ব্যস্ত বড়ি বানানোয়। বাড়ির আপন চাহিদা মিটিয়ে এটি হাত বদল হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে।বড়ি তৈরির কারিগর পূন্ডরী গ্রামের রাশেদা বেগম বলেন,৮বছরের অভিজ্ঞতা আমার। মাসে ২০থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হয়। সেটি দিয়ে পরিবার ও নিজের চাহিদা মিটিয়ে থাকি।তিনি আরো জানান, আমাদের দেখে এলাকার ১০টি নারী এই কাজে এখন ব্যস্ত।

শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে তা বানানোর ধুম পড়ে যায়। এখানকার বড়ি সুস্বাদু। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের নাটোর,বগুড়া, রাজশাহী ও ঢাকায় সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এগুলো সরবরাহ করা হয়।বড়ির কারিগর আলামিন শাহ জানান, এই পেশা প্রায় ১৫ বছর ধরে করি। তাই আজও তা করে আসছি। বড়ি মূলত ডাল,মাষকলাই, চালকুমড়া, জিরা, কালোজিরা, মোহরী দিয়ে তৈরি করা হয়। প্রতি কেজি ১২০-১৫০ টাকা করে পাইকারি বিক্রয় করা হয়।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়তই পাইকাররা এসে আমাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে যায়। এছাড়া স্থানীয় বিভিন্ন হাটেও খুচরা বিক্রয় করা হয় এই পণ্য। বগুড়া জেলা থেকে বড়ি কিনতে এসেছেন ব্যবসায়ী মিলটন আলী। তিনি বলেন, এখানকার বড়ি যেমন নরম, তেমনি খেতেও বেশ ভালো লাগে। একবার যে এটি খায়, পরেরবার আবার খুঁজে কিনে নিয়ে যায়। আমার কিছু নিজস্ব খরিদ্দার আছেন, যাদের প্রধান পছন্দ এখানকার বড়ি। অন্য বড়ি কম দামে পাওয়া গেলেও নিতে চান না গ্রাহকরা। তাই বাধ্য হয়ে তাদের জন্য এখান থেকেই নিয়ে যাই।