ঢাকা , বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

“২১৯ বলের ম্যাচে বাংলাদেশের ১২ বলের লড়াই!”

প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশের সময় : ০৯:১০:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২
  • / ২৫৫ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া প্রতিবেদক।। “২১৯ বলের ম্যাচে বাংলাদেশের ১২ বলের লড়াই!”।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ খেলতে পারে কি পারে না সেটা নিয়ে প্রশ্ন দিনকে দিন বাড়ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই ফরম্যাটে নিজেদের সবচেয়ে বড় পরাজয়ের পর আরও স্পষ্ট, এই ফরম্যাটে এখনও কুলকিনারা খুঁজে পায়নি বাংলাদেশ। না আছে দলের কোনও পরিকল্পনা, থাকলেও নেই বাস্তবায়নের সামর্থ্য কিংবা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাথা উঁচু করে লড়াইয়ের তীব্র সাহস, জয়ের তাড়না। বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ১০৪ রানের বড় পরাজয়কে সঙ্গী করেছে সাকিবের দল।

বাংলাদেশকে নিয়ে ছেলেখেলায় মেতে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকা আগে ব্যাটিং করে ৫ উইকেটে ২০৫ রান করে। জবাবে ১০১ রানেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথমবার মাঠে নেমেই হতশ্রী এক রেকর্ডকে সঙ্গী করলো বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ২৪০ বলের জমজমাট লড়াই। ১৬.৩ ওভারে বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যাওয়ায় কার্যত ম্যাচের স্থায়ীকাল ২১৯ বল। জয় তো দূর আকাশের ধ্রুবতারা। ২১৯ বলের ম্যাচে বাংলাদেশ লড়াইয়ে ছিল মাত্র ১২ বল।

সেটাও বোলিং ইনিংসে এক ওভার, ব্যাটিং ইনিংসে এক ওভার। টস হেরে বোলিং করতে নেমে আগের ম্যাচের নায়ক তাসকিন আহমেদের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করান। রান দেন মাত্র ২। পরের ১৯ ওভারে বাংলাদেশের বোলিংয়ে তাল-লয় কিছুই ছিল না। বারবার লাইন, লেন্থ হারিয়ে বোলাররা হয়ে যান দিকহারা। রাইলি রুসো, কুইন্টন ডি ককের সামনে কোথায় বল ফেলবেন তা নিয়েও যেন কতশত ভাবনা। প্রায় প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি। চার-ছক্কার সমারোহে দক্ষিণ আফ্রিকা রানের পাহাড় গড়ে ফেলে নিমিষেই।

উপমহাদেশের বাইরে বাংলাদেশের বড় লক্ষ্য তাড়া করার অভিজ্ঞতা একদমই নেই। দুইশর বেশি রান তাড়া করে বাংলাদেশ কেবল একবারই জয় পেয়েছে, সেটাও নিদাহাস ট্রফিতে। শুরুটা তেমনই হয়েছিল। কাগিসো রাবাদার বলে সৌম্য সরকারের ফ্লিকে দুই ছক্কা এবং নাজমুল হোসেন শান্তর মিড অন দিয়ে চার বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। প্রথম ওভারেই স্কোরবোর্ডে রান ১৭। কিন্তু ওখানেই শেষ লড়াই। উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে যায় ব্যাটিং অর্ডার। ব্যাটসম্যানরা শুধু এসেছেন আর গেছেন।

লিটন দাস বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়াই করলেও বাকিরা ছিলেন নিষ্প্রভ। আনরিখ নর্কিয়ের উত্তাপের পর কেশব মহারাজ ও তাবরাইজ শামসির ঘূর্ণিতে অসহায় আত্মসমর্পণে শতরানের আগে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। শেষ দিকে মোস্তাফিজুর রহমানের ব্যাটে ছক্কা না পেলে বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে সর্বাধিক দশবার একশ রানের নিচে অলআউট হওয়ার লজ্জা পেতো। ৯ বার দলীয় স্কোর তিন অঙ্কের ঘরে না যেতেই অলআউট হওয়ার রেকর্ড ভাগাভাগি করছে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস। সব হারানোর দিনে এমন রেকর্ডও নিজেদের গায়ে জড়ালে সাকিবদের কষ্ট বাড়তো নিশ্চয়ই।

বরং দক্ষিণ আফ্রিকা আজ যে ছেলেখেলায় মেতে উঠে বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বড় হারের লজ্জা দিয়েছে, তা হয়তো সিডনির বিশালতার কাছে হারিয়ে যাবে একদিন।

এই নিউজটি শেয়ার করুন

x

“২১৯ বলের ম্যাচে বাংলাদেশের ১২ বলের লড়াই!”

প্রকাশের সময় : ০৯:১০:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২২

ক্রীড়া প্রতিবেদক।। “২১৯ বলের ম্যাচে বাংলাদেশের ১২ বলের লড়াই!”।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ খেলতে পারে কি পারে না সেটা নিয়ে প্রশ্ন দিনকে দিন বাড়ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই ফরম্যাটে নিজেদের সবচেয়ে বড় পরাজয়ের পর আরও স্পষ্ট, এই ফরম্যাটে এখনও কুলকিনারা খুঁজে পায়নি বাংলাদেশ। না আছে দলের কোনও পরিকল্পনা, থাকলেও নেই বাস্তবায়নের সামর্থ্য কিংবা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাথা উঁচু করে লড়াইয়ের তীব্র সাহস, জয়ের তাড়না। বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ১০৪ রানের বড় পরাজয়কে সঙ্গী করেছে সাকিবের দল।

বাংলাদেশকে নিয়ে ছেলেখেলায় মেতে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকা আগে ব্যাটিং করে ৫ উইকেটে ২০৫ রান করে। জবাবে ১০১ রানেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস। ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথমবার মাঠে নেমেই হতশ্রী এক রেকর্ডকে সঙ্গী করলো বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ২৪০ বলের জমজমাট লড়াই। ১৬.৩ ওভারে বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যাওয়ায় কার্যত ম্যাচের স্থায়ীকাল ২১৯ বল। জয় তো দূর আকাশের ধ্রুবতারা। ২১৯ বলের ম্যাচে বাংলাদেশ লড়াইয়ে ছিল মাত্র ১২ বল।

সেটাও বোলিং ইনিংসে এক ওভার, ব্যাটিং ইনিংসে এক ওভার। টস হেরে বোলিং করতে নেমে আগের ম্যাচের নায়ক তাসকিন আহমেদের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করান। রান দেন মাত্র ২। পরের ১৯ ওভারে বাংলাদেশের বোলিংয়ে তাল-লয় কিছুই ছিল না। বারবার লাইন, লেন্থ হারিয়ে বোলাররা হয়ে যান দিকহারা। রাইলি রুসো, কুইন্টন ডি ককের সামনে কোথায় বল ফেলবেন তা নিয়েও যেন কতশত ভাবনা। প্রায় প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি। চার-ছক্কার সমারোহে দক্ষিণ আফ্রিকা রানের পাহাড় গড়ে ফেলে নিমিষেই।

উপমহাদেশের বাইরে বাংলাদেশের বড় লক্ষ্য তাড়া করার অভিজ্ঞতা একদমই নেই। দুইশর বেশি রান তাড়া করে বাংলাদেশ কেবল একবারই জয় পেয়েছে, সেটাও নিদাহাস ট্রফিতে। শুরুটা তেমনই হয়েছিল। কাগিসো রাবাদার বলে সৌম্য সরকারের ফ্লিকে দুই ছক্কা এবং নাজমুল হোসেন শান্তর মিড অন দিয়ে চার বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। প্রথম ওভারেই স্কোরবোর্ডে রান ১৭। কিন্তু ওখানেই শেষ লড়াই। উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে যায় ব্যাটিং অর্ডার। ব্যাটসম্যানরা শুধু এসেছেন আর গেছেন।

লিটন দাস বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়াই করলেও বাকিরা ছিলেন নিষ্প্রভ। আনরিখ নর্কিয়ের উত্তাপের পর কেশব মহারাজ ও তাবরাইজ শামসির ঘূর্ণিতে অসহায় আত্মসমর্পণে শতরানের আগে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। শেষ দিকে মোস্তাফিজুর রহমানের ব্যাটে ছক্কা না পেলে বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে সর্বাধিক দশবার একশ রানের নিচে অলআউট হওয়ার লজ্জা পেতো। ৯ বার দলীয় স্কোর তিন অঙ্কের ঘরে না যেতেই অলআউট হওয়ার রেকর্ড ভাগাভাগি করছে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস। সব হারানোর দিনে এমন রেকর্ডও নিজেদের গায়ে জড়ালে সাকিবদের কষ্ট বাড়তো নিশ্চয়ই।

বরং দক্ষিণ আফ্রিকা আজ যে ছেলেখেলায় মেতে উঠে বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বড় হারের লজ্জা দিয়েছে, তা হয়তো সিডনির বিশালতার কাছে হারিয়ে যাবে একদিন।