ঢাকা , শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেড়াতে আসা মেয়েকে উত্যক্ত করার জেরে নিহত ১, আহত ৩

মো. আলমগীর খন্দকার
  • প্রকাশের সময় : ০১:৫৩:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪
  • / ২৬ বার পড়া হয়েছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা মেয়েকে উত্যক্ত করার জেরে বাদশা মিয়া (১৮) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরো ৩ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বাদশা মিয়া উপজেলার বাড্ডা গ্রামের আবু কালামের একমাত্র ছেলে।

জানা যায়, আহতদের মধ্যে জিহাদ ও সাইফুল ইসলাম নামে দুই যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লায় ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আরেকজনকে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতদের বোন পপি আক্তার নবীনগর থানায় অনিক মিয়াকে প্রধান আসামি করে এজাহারভুক্ত ২১ ও অজ্ঞাতনামা আরো ৪ থেকে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

এলাকাবাসী জানান, ঢাকা থেকে বাড্ডা গ্রামে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে একটি মেয়ে বেড়াতে এলে ওই মেয়ের সাথে মামলার প্রধান আসামি অনিক ও তার বন্ধুরা সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেন। অপরদিকে মহল্লার সাইফুল, জিহাদ, তারেক ও তার বন্ধুরা একই মেয়ের সাথে কথা বলতেন। ওই মেয়ের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেন আসামি পক্ষের শাহ আলম মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া। এ নিয়ে শুক্রবার হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই দিন বাদশা ছিলেন পার্শ্ববর্তী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জারচরে একটি বিয়ের দাওয়াতে। হাতাহাতির বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়ার জন্য গ্রামের মাতব্বরদের জানানো হলেও তারা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরদিন শনিবার সন্ধ্যার পর আসামি পক্ষের লোকজন বাড্ডা পশ্চিম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার নাম করে ওই মেয়ের খবর নিতে গিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে সাইফুল আহত হয়। এটি দেখে বাদশা চিৎকার দিলে হামলাকারীরা বাদশা মিয়ার উপর হামলা চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করে। এরপর তারেক ও জিহাদকে কুপিয়ে আহত করা হয়।

আরো জানা যায়, গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা ও ঢাকায় রেফার করেন। ঢাকায় নেয়ার পথিমধ্যে রক্ত শূন্যতায় বাদশা মিয়া মারা যান। মারা যাওয়ার আগে হামলাকারীদের কয়েকজনের নাম নিজ মুখে বলে গেছেন। আহত সাইফুলের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।

মামলার বাদী পপি আক্তার জানান, আমাদের তিন বোনের মধ্য একমাত্র ভাই বাদশা। আমার ভাই এই ঘটনার সাথে জড়িত না। কিছু দিনের মধ্যে সে বিদেশ চলে যেতো। তাকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

নবীনগর থানার ওসি মাহবুব আলম জানান, এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। নিহতের লাশ রাতেই উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং নিহতের বোন মামলা দায়ের করেছেন। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ট্যাগস :

এই নিউজটি শেয়ার করুন

x

বেড়াতে আসা মেয়েকে উত্যক্ত করার জেরে নিহত ১, আহত ৩

প্রকাশের সময় : ০১:৫৩:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা মেয়েকে উত্যক্ত করার জেরে বাদশা মিয়া (১৮) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরো ৩ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বাদশা মিয়া উপজেলার বাড্ডা গ্রামের আবু কালামের একমাত্র ছেলে।

জানা যায়, আহতদের মধ্যে জিহাদ ও সাইফুল ইসলাম নামে দুই যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লায় ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আরেকজনকে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতদের বোন পপি আক্তার নবীনগর থানায় অনিক মিয়াকে প্রধান আসামি করে এজাহারভুক্ত ২১ ও অজ্ঞাতনামা আরো ৪ থেকে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

এলাকাবাসী জানান, ঢাকা থেকে বাড্ডা গ্রামে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে একটি মেয়ে বেড়াতে এলে ওই মেয়ের সাথে মামলার প্রধান আসামি অনিক ও তার বন্ধুরা সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেন। অপরদিকে মহল্লার সাইফুল, জিহাদ, তারেক ও তার বন্ধুরা একই মেয়ের সাথে কথা বলতেন। ওই মেয়ের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেন আসামি পক্ষের শাহ আলম মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া। এ নিয়ে শুক্রবার হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই দিন বাদশা ছিলেন পার্শ্ববর্তী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জারচরে একটি বিয়ের দাওয়াতে। হাতাহাতির বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়ার জন্য গ্রামের মাতব্বরদের জানানো হলেও তারা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরদিন শনিবার সন্ধ্যার পর আসামি পক্ষের লোকজন বাড্ডা পশ্চিম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার নাম করে ওই মেয়ের খবর নিতে গিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে সাইফুল আহত হয়। এটি দেখে বাদশা চিৎকার দিলে হামলাকারীরা বাদশা মিয়ার উপর হামলা চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করে। এরপর তারেক ও জিহাদকে কুপিয়ে আহত করা হয়।

আরো জানা যায়, গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা ও ঢাকায় রেফার করেন। ঢাকায় নেয়ার পথিমধ্যে রক্ত শূন্যতায় বাদশা মিয়া মারা যান। মারা যাওয়ার আগে হামলাকারীদের কয়েকজনের নাম নিজ মুখে বলে গেছেন। আহত সাইফুলের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।

মামলার বাদী পপি আক্তার জানান, আমাদের তিন বোনের মধ্য একমাত্র ভাই বাদশা। আমার ভাই এই ঘটনার সাথে জড়িত না। কিছু দিনের মধ্যে সে বিদেশ চলে যেতো। তাকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

নবীনগর থানার ওসি মাহবুব আলম জানান, এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। নিহতের লাশ রাতেই উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং নিহতের বোন মামলা দায়ের করেছেন। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।