ঢাকা , শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউটিউব দেখে এটিএম বুথ লুটের পরিকল্পনা

প্রতিদিনের পোস্ট ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৩:০৮:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

ভিডিও দেখে নিজে উদ্বুদ্ধ হয়ে এটিএম বুথের টাকা লুট করার পরিকল্পনা করে মো. আরিফুল ইসলাম (২৭)। আর সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গুলশান থানাধীন শাহজাদপুর প্রগতি স্মরণীর মাইশা চৌধুরী টাওয়ারে অবস্থিত মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথের সিকিউরিটি গার্ডকে নৃশংসভাবে হত্যা করে সে। এরপর এটিএম বুথের ভেতরে থাকা টাকা বের করতে সরঞ্জামাদি দিয়ে চেষ্টা করেও ভাঙতে পারেনি। পরে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

এই ঘটনায় মামলার প্রেক্ষিতে ঘটনার চারদিন পর তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় তদন্ত করে শাহজাতপুরের কালাচাদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের গুলশান বিভাগের জোনাল টিম। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি, এটিএম বুথ ভাঙার কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি, চেনি, সাবল বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, গত ১০ এপ্রিল ভোর অনুমান ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে গুলশান থানাধীন শাহজাদপুর প্রগতি স্মরণীর মাইশা চৌধুরী টাওয়ারে অবস্থিত মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথে কর্মরত সিকিউরিটি গার্ড হাসান মাহমুদকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করে অজ্ঞাত আসামিরা। পরে নিহতের ভাই মাহফুজুর রহমান রুমেল গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য থানা পুলিশ, সিআইডি এবং অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি ডিবি গুলশান জোনাল টিম মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তকালীন তথ্য প্রযুক্তি, সিসিটিভি ফুটেজ, আসামির ব্যবহৃত মোবাইল ও পরিহিত পোশাক এবং গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকারী শনাক্ত করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে আসামি আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সে জানা যায়, গত ১০/১২ বৎসর ধরে বিভিন্ন অফিস ও বাসা বাড়ির আসবাবপত্র পরিবহনের কাজ করত। ২/৩ বছর পূর্বে সে তার বন্ধু বান্ধবের পরামর্শে উক্ত ব্যবসার পাশাপাশি ইট, বালি, পাথর সরবরাহের ব্যবসা শুরু করে। উক্ত ব্যবসায় লোকসান হওয়ার কারণে সে ১৪/১৫ লক্ষ টাকার ঋনগ্রস্থ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সে তার একটি কিডনি বিক্রির চেষ্টা করে মিরপুর এলাকায় লিফলেট ছাড়ে। কিন্তু কিডনি বিক্রি করতে না পারায় এবং পাওনাদারদের দেনা পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদারগন তার বাসায় গিয়ে তাকে খুঁজতে থাকে। পাওনাদারদের চাপে ও ভয়ে সে গত ৩/৪ মাস ধরে পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাজধানীর মিরপুর-১ সহ বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করে থাকে এবং কিভাবে টাকা পরিশোধ করা যাবে সে চিন্তা ভাবনা ও পরিকল্পনা করতে থাকে এবং সেই ধারাবাহিকতা সে এটিএম বুথ লুট করার উদ্দেশ্যে অত্যন্ত পাশবিক কায়দায় নির্মমভাবে বুথের সিকিউরিটি গার্ডকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় কুপিয়ে হত্যা করে।

যেভাবে এটিএম বুথ লুটের পরিকল্পনা করে হাসান:
হারুন-অর-রশীদ বলেন, গ্রেফতার আরিফুল ইসলাম আরও জানায়, ইউটিউবের মাধ্যমে ব্যাংক/এটিএম বুথ ডাকাতির দৃশ্য দেখতে পেয়ে খুন করে হলেও এটিএম বুথের টাকা লুট করার পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্বাধীন বাংলা সুপার মার্কেট থেকে আসামি হাতুড়ি, হেমার, চেনি, মিরপুর পল্লবী মিল্লাত ক্যাম্প মোড় থেকে চাপাতি, সাবল, চাকু ও মিরপুর স্টেডিয়াম এর ফুটপাত থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একটি জার্সি ক্রয় করে এবং লোক সমাগম কম/নিরিবিলি এমন এটিএম বুথের অবস্থান খুঁজতে থাকে। গুলশান থানাধীন শাহজাদপুর, ৩০/বি, মাইশা চৌধুরী টাওয়ার, মধুমতি ব্যাংক, প্রগতি স্বরণী শাখার এটিএম বুথ লোক সমাগম কম/নিরিবিলি মনে হওয়ায় সে ওই এটিএম বুথ লুটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

ঘটনাস্থল রেকি করে যেভাবে:
হারুণ-অর-রশীদ বলেন, আরিফুল ইসলাম গত ১০ এপ্রিল ২০১৪ THAI International লেখা নীল রংয়ের একটি ব্যাগে করে চাপাতি, এটিএম বুথ ভাঙার কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি, চেনি, সাবলসহ বিভিন্ন মালামাল PUMA ব্র্যান্ডের জলপাই রংয়ের টি-শার্ট পরিধান করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরি করে রাত ১২ টা ২০ মিনিটে তুরাগ বাস যোগে ঘটনাস্থলের বিপরীতে পাশে এসে ঘটনাস্থল রেকি করে। পরে রাস্তার ডিভাইডার পার হয়ে ঘটনাস্থলের সামনে দিয়ে পুনরায় রামপুরার দিকে যায়। আনুমানিক ৩টা ৪৯ মিনিটে তার পরিহিত PUMA ব্র্যান্ডের জলপাই রংয়ের টি-শার্টের উপরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি পরিধান করে পুনরায় ঘটনাস্থলের আশপাশে ঘোরাঘুরি ও অবস্থান করতে থাকে। প্রায় দেড়ঘণ্টা ধরে পর্যবেক্ষণ করে সে আনুমানিক ৫টা ১৩ মিনিটে ঘটনাস্থলে প্রবেশ করাকালীন এটিএম বুথের নিরাপত্তা কর্মী ভুক্তভোগী হাসান মাহমুদের বাধার সম্মুখীন হওয়ায় সে তাকে (ভুক্তভোগী) চাপাতি দিয়ে গলায় কুপিয়ে হত্যা করে হাতুড়ি, হেমার, চেনি, সাবল, চাপাতি দিয়ে এটিএম বুথ ভাঙ্গার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে প্রায় ১০/১২ মিনিট চেষ্টা করে এটিএম বুথ ভাঙতে ব্যর্থ হয়ে সে ঘটনায় ব্যবহৃত হাতুড়ি, হেমার, চেনি, সাবল, চাপাতি, ব্যাগ ইত্যাদি ঘটনাস্থলে রেখে একটি ছোট চাকুটি নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

ঘটনার পরপরই সে ঘটনাস্থল এর বিপরীতে শাহজাদপুর বাঁশতলায় অবস্থান করে এবং আনুমানিক ৫টা ৩১ মিনিটে মিরপুরগামী অছিম পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-ব-১৩-১২৭৩) বাসে উঠে তার টি-শার্টের উপরে পরিহিত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সিটি খুলে উক্ত বাসের সিটের নীচে রেখে মিরপুরের দিকে চলে যায়। বাসের ড্রাইভার ও হেলপার উক্ত জার্সিটি পেয়ে কালশী রাস্তার মাথায় ডিভাইডারের উপর রেখে দেয়।

তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই মামলাটির ছায়া তদন্তকালীন ওই জার্সিটি বাসের ড্রাইভার ও হেলপারের দেখানো মতে কালশী রাস্তার মাথায় ডিভাইডারের উপর থেকে জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতার আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হারুন-অর-রশীদ বলেন, হত্যাকাণ্ডের ৪ দিন পরই তদন্ত করে আসামি আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পরে সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছেন৷ সে আজানায় ঋণের জড়জড়িত হয়ে সে দীর্ঘদিন পরিবার ছাড়া ছিল। পরে ইউটিউবে এটিএম বুথ লুটের ভিডিও দেখে সে পরিকল্পনা করে।

ট্যাগস :

এই নিউজটি শেয়ার করুন

x

ইউটিউব দেখে এটিএম বুথ লুটের পরিকল্পনা

প্রকাশের সময় : ০৩:০৮:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪

ভিডিও দেখে নিজে উদ্বুদ্ধ হয়ে এটিএম বুথের টাকা লুট করার পরিকল্পনা করে মো. আরিফুল ইসলাম (২৭)। আর সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গুলশান থানাধীন শাহজাদপুর প্রগতি স্মরণীর মাইশা চৌধুরী টাওয়ারে অবস্থিত মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথের সিকিউরিটি গার্ডকে নৃশংসভাবে হত্যা করে সে। এরপর এটিএম বুথের ভেতরে থাকা টাকা বের করতে সরঞ্জামাদি দিয়ে চেষ্টা করেও ভাঙতে পারেনি। পরে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

এই ঘটনায় মামলার প্রেক্ষিতে ঘটনার চারদিন পর তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় তদন্ত করে শাহজাতপুরের কালাচাদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের গুলশান বিভাগের জোনাল টিম। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি, এটিএম বুথ ভাঙার কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি, চেনি, সাবল বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, গত ১০ এপ্রিল ভোর অনুমান ৫টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে গুলশান থানাধীন শাহজাদপুর প্রগতি স্মরণীর মাইশা চৌধুরী টাওয়ারে অবস্থিত মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথে কর্মরত সিকিউরিটি গার্ড হাসান মাহমুদকে (৬০) কুপিয়ে হত্যা করে অজ্ঞাত আসামিরা। পরে নিহতের ভাই মাহফুজুর রহমান রুমেল গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য থানা পুলিশ, সিআইডি এবং অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি ডিবি গুলশান জোনাল টিম মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তকালীন তথ্য প্রযুক্তি, সিসিটিভি ফুটেজ, আসামির ব্যবহৃত মোবাইল ও পরিহিত পোশাক এবং গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকারী শনাক্ত করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে আসামি আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে সে জানা যায়, গত ১০/১২ বৎসর ধরে বিভিন্ন অফিস ও বাসা বাড়ির আসবাবপত্র পরিবহনের কাজ করত। ২/৩ বছর পূর্বে সে তার বন্ধু বান্ধবের পরামর্শে উক্ত ব্যবসার পাশাপাশি ইট, বালি, পাথর সরবরাহের ব্যবসা শুরু করে। উক্ত ব্যবসায় লোকসান হওয়ার কারণে সে ১৪/১৫ লক্ষ টাকার ঋনগ্রস্থ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সে তার একটি কিডনি বিক্রির চেষ্টা করে মিরপুর এলাকায় লিফলেট ছাড়ে। কিন্তু কিডনি বিক্রি করতে না পারায় এবং পাওনাদারদের দেনা পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদারগন তার বাসায় গিয়ে তাকে খুঁজতে থাকে। পাওনাদারদের চাপে ও ভয়ে সে গত ৩/৪ মাস ধরে পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাজধানীর মিরপুর-১ সহ বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করে থাকে এবং কিভাবে টাকা পরিশোধ করা যাবে সে চিন্তা ভাবনা ও পরিকল্পনা করতে থাকে এবং সেই ধারাবাহিকতা সে এটিএম বুথ লুট করার উদ্দেশ্যে অত্যন্ত পাশবিক কায়দায় নির্মমভাবে বুথের সিকিউরিটি গার্ডকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় কুপিয়ে হত্যা করে।

যেভাবে এটিএম বুথ লুটের পরিকল্পনা করে হাসান:
হারুন-অর-রশীদ বলেন, গ্রেফতার আরিফুল ইসলাম আরও জানায়, ইউটিউবের মাধ্যমে ব্যাংক/এটিএম বুথ ডাকাতির দৃশ্য দেখতে পেয়ে খুন করে হলেও এটিএম বুথের টাকা লুট করার পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্বাধীন বাংলা সুপার মার্কেট থেকে আসামি হাতুড়ি, হেমার, চেনি, মিরপুর পল্লবী মিল্লাত ক্যাম্প মোড় থেকে চাপাতি, সাবল, চাকু ও মিরপুর স্টেডিয়াম এর ফুটপাত থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একটি জার্সি ক্রয় করে এবং লোক সমাগম কম/নিরিবিলি এমন এটিএম বুথের অবস্থান খুঁজতে থাকে। গুলশান থানাধীন শাহজাদপুর, ৩০/বি, মাইশা চৌধুরী টাওয়ার, মধুমতি ব্যাংক, প্রগতি স্বরণী শাখার এটিএম বুথ লোক সমাগম কম/নিরিবিলি মনে হওয়ায় সে ওই এটিএম বুথ লুটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

ঘটনাস্থল রেকি করে যেভাবে:
হারুণ-অর-রশীদ বলেন, আরিফুল ইসলাম গত ১০ এপ্রিল ২০১৪ THAI International লেখা নীল রংয়ের একটি ব্যাগে করে চাপাতি, এটিএম বুথ ভাঙার কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি, চেনি, সাবলসহ বিভিন্ন মালামাল PUMA ব্র্যান্ডের জলপাই রংয়ের টি-শার্ট পরিধান করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরি করে রাত ১২ টা ২০ মিনিটে তুরাগ বাস যোগে ঘটনাস্থলের বিপরীতে পাশে এসে ঘটনাস্থল রেকি করে। পরে রাস্তার ডিভাইডার পার হয়ে ঘটনাস্থলের সামনে দিয়ে পুনরায় রামপুরার দিকে যায়। আনুমানিক ৩টা ৪৯ মিনিটে তার পরিহিত PUMA ব্র্যান্ডের জলপাই রংয়ের টি-শার্টের উপরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি পরিধান করে পুনরায় ঘটনাস্থলের আশপাশে ঘোরাঘুরি ও অবস্থান করতে থাকে। প্রায় দেড়ঘণ্টা ধরে পর্যবেক্ষণ করে সে আনুমানিক ৫টা ১৩ মিনিটে ঘটনাস্থলে প্রবেশ করাকালীন এটিএম বুথের নিরাপত্তা কর্মী ভুক্তভোগী হাসান মাহমুদের বাধার সম্মুখীন হওয়ায় সে তাকে (ভুক্তভোগী) চাপাতি দিয়ে গলায় কুপিয়ে হত্যা করে হাতুড়ি, হেমার, চেনি, সাবল, চাপাতি দিয়ে এটিএম বুথ ভাঙ্গার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে প্রায় ১০/১২ মিনিট চেষ্টা করে এটিএম বুথ ভাঙতে ব্যর্থ হয়ে সে ঘটনায় ব্যবহৃত হাতুড়ি, হেমার, চেনি, সাবল, চাপাতি, ব্যাগ ইত্যাদি ঘটনাস্থলে রেখে একটি ছোট চাকুটি নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

ঘটনার পরপরই সে ঘটনাস্থল এর বিপরীতে শাহজাদপুর বাঁশতলায় অবস্থান করে এবং আনুমানিক ৫টা ৩১ মিনিটে মিরপুরগামী অছিম পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-ব-১৩-১২৭৩) বাসে উঠে তার টি-শার্টের উপরে পরিহিত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সিটি খুলে উক্ত বাসের সিটের নীচে রেখে মিরপুরের দিকে চলে যায়। বাসের ড্রাইভার ও হেলপার উক্ত জার্সিটি পেয়ে কালশী রাস্তার মাথায় ডিভাইডারের উপর রেখে দেয়।

তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই মামলাটির ছায়া তদন্তকালীন ওই জার্সিটি বাসের ড্রাইভার ও হেলপারের দেখানো মতে কালশী রাস্তার মাথায় ডিভাইডারের উপর থেকে জব্দ করা হয়েছে। গ্রেফতার আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হারুন-অর-রশীদ বলেন, হত্যাকাণ্ডের ৪ দিন পরই তদন্ত করে আসামি আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পরে সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছেন৷ সে আজানায় ঋণের জড়জড়িত হয়ে সে দীর্ঘদিন পরিবার ছাড়া ছিল। পরে ইউটিউবে এটিএম বুথ লুটের ভিডিও দেখে সে পরিকল্পনা করে।