ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দর্জির কাজ করেও জিপিএ ৫ পেয়েছে সুমাইয়া, লেখাপড়া চালাতে পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও

মোঃ আলমগীর খন্দকার, প্রতিদিনের পোস্ট
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১৫:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৩
  • / ১৮০ বার পড়া হয়েছে

অদম্য ইচ্ছার কাছে দারিদ্র্য যে কখনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না তা আবারো দেখিয়ে দিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার মেধাবী শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার। অভাব অনটনের সংসারে মায়ের সাথে দর্জির কাজ, কাঁথা সেলাই ও প্রাইভেট পড়ানোর ফাঁকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পেয়েছেন ‘এ প্লাস’। তার এ সফলতায় গর্বিত এলাকাবাসী। তবে আর্থিক অনটনের কারণে সুমাইয়ার উচ্চতর শিক্ষা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর এলাকার সুহাতা গ্রামের জীবন মিয়া ও পারভিন আক্তারের বড় মেয়ে সুমাইয়া আক্তার। তিনি এ বছর উপজেলার ভোলাচং হাই স্কুল থেকে মানবিক শাখায় এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এ প্লাস পেয়েছেন। তবে তার এ সফলতা আর দশজনের মতো মোটেই সহজ ছিলো না। অভাবের সংসারে অটোচালক বাবার আয় যথেষ্ট না হওয়ায় মা কাঁথা সেলাই করে সংসারের ঘানি টানেন।

পরিবারের বড় সন্তান হওয়ায় দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেননি সুমাইয়া। মায়ের পাশে দাঁড়াতে দর্জি ও কাঁথা সেলাইয়ের কাজের পাশাপাশি টিউশনিও করতেন। এমন কঠিন পরিস্থিতির মাঝেও পড়ালেখা থেকে দূরে সরে যাননি সুমাইয়া।

নিয়মিত স্কুলে আসা-যাওয়ার পাশাপাশি মায়ের সাথে প্রতিদিন কাঁথা সেলাই ও দর্জির কাজ করতেন।  

দিনভর কঠোর পরিশ্রম শেষে ছোট্ট ঘরে পড়ার জায়গা হতো না। তাই চাচা স্বপন মিয়ার প্রতিষ্ঠিত গুঞ্জন পাঠাগারে বসে চালিয়ে যেতেন পড়া লেখা। তার এ অদম্য ইচ্ছার কারণে শিক্ষকরাও তাকে বিনামূল্যে প্রাইভেট শিক্ষা দিতেন, পাশাপাশি এলাকাবাসী তাকে নানাভাবে সহযোগিতা করত। আর তার সফলতা স্বরূপ সুমাইয়া অর্জন করে এ প্লাস।

সুমাইয়া প্রতিদিনের পোস্টকে জানান, সকলের সহযোগিতায় ভালো ফলাফল নিয়ে মাধ্যমিকের গন্ডি পার হয়েছি। আর এর পেছনে আমার চাচা স্বপন মিয়া ও আমার ৩ জন শিক্ষক যারা আমাকে বিনামূল্যে প্রাইভেট পড়িয়েছেন তাদের অবদান রয়েছে। তবে অভাবের সংসার হওয়ায় সামনের শিক্ষা জীবন কিভাবে চালিয়ে নেই তা নিয়ে চিন্তায় আছি।  

তিনি আরো বলেন, আমি একজন ভালো মানুষ হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখি। যাতে ভবিষ্যতে আমার মত যারা আর্থিক সংকেট শিক্ষা জীবন চালিয়ে নিতে কষ্টে থাকবে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি।

এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.
একরামুল ছিদ্দিক প্রতিদিনের পোস্টকে বলেন, সুমাইয়ার ভবিষ্যত শিক্ষা জীবন আরো মসৃন করতে উপজেলা প্রশাসন সর্বদা পাশে থাকবে। তাকে ডেকে এনে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হওয়ার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। এছাড়াও তার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে যা যা প্রয়োজন সবকিছুই করা হবে।

এই নিউজটি শেয়ার করুন

x

দর্জির কাজ করেও জিপিএ ৫ পেয়েছে সুমাইয়া, লেখাপড়া চালাতে পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও

প্রকাশের সময় : ০৮:১৫:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৩

অদম্য ইচ্ছার কাছে দারিদ্র্য যে কখনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না তা আবারো দেখিয়ে দিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার মেধাবী শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার। অভাব অনটনের সংসারে মায়ের সাথে দর্জির কাজ, কাঁথা সেলাই ও প্রাইভেট পড়ানোর ফাঁকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পেয়েছেন ‘এ প্লাস’। তার এ সফলতায় গর্বিত এলাকাবাসী। তবে আর্থিক অনটনের কারণে সুমাইয়ার উচ্চতর শিক্ষা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর এলাকার সুহাতা গ্রামের জীবন মিয়া ও পারভিন আক্তারের বড় মেয়ে সুমাইয়া আক্তার। তিনি এ বছর উপজেলার ভোলাচং হাই স্কুল থেকে মানবিক শাখায় এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এ প্লাস পেয়েছেন। তবে তার এ সফলতা আর দশজনের মতো মোটেই সহজ ছিলো না। অভাবের সংসারে অটোচালক বাবার আয় যথেষ্ট না হওয়ায় মা কাঁথা সেলাই করে সংসারের ঘানি টানেন।

পরিবারের বড় সন্তান হওয়ায় দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেননি সুমাইয়া। মায়ের পাশে দাঁড়াতে দর্জি ও কাঁথা সেলাইয়ের কাজের পাশাপাশি টিউশনিও করতেন। এমন কঠিন পরিস্থিতির মাঝেও পড়ালেখা থেকে দূরে সরে যাননি সুমাইয়া।

নিয়মিত স্কুলে আসা-যাওয়ার পাশাপাশি মায়ের সাথে প্রতিদিন কাঁথা সেলাই ও দর্জির কাজ করতেন।  

দিনভর কঠোর পরিশ্রম শেষে ছোট্ট ঘরে পড়ার জায়গা হতো না। তাই চাচা স্বপন মিয়ার প্রতিষ্ঠিত গুঞ্জন পাঠাগারে বসে চালিয়ে যেতেন পড়া লেখা। তার এ অদম্য ইচ্ছার কারণে শিক্ষকরাও তাকে বিনামূল্যে প্রাইভেট শিক্ষা দিতেন, পাশাপাশি এলাকাবাসী তাকে নানাভাবে সহযোগিতা করত। আর তার সফলতা স্বরূপ সুমাইয়া অর্জন করে এ প্লাস।

সুমাইয়া প্রতিদিনের পোস্টকে জানান, সকলের সহযোগিতায় ভালো ফলাফল নিয়ে মাধ্যমিকের গন্ডি পার হয়েছি। আর এর পেছনে আমার চাচা স্বপন মিয়া ও আমার ৩ জন শিক্ষক যারা আমাকে বিনামূল্যে প্রাইভেট পড়িয়েছেন তাদের অবদান রয়েছে। তবে অভাবের সংসার হওয়ায় সামনের শিক্ষা জীবন কিভাবে চালিয়ে নেই তা নিয়ে চিন্তায় আছি।  

তিনি আরো বলেন, আমি একজন ভালো মানুষ হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখি। যাতে ভবিষ্যতে আমার মত যারা আর্থিক সংকেট শিক্ষা জীবন চালিয়ে নিতে কষ্টে থাকবে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি।

এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.
একরামুল ছিদ্দিক প্রতিদিনের পোস্টকে বলেন, সুমাইয়ার ভবিষ্যত শিক্ষা জীবন আরো মসৃন করতে উপজেলা প্রশাসন সর্বদা পাশে থাকবে। তাকে ডেকে এনে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হওয়ার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। এছাড়াও তার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে যা যা প্রয়োজন সবকিছুই করা হবে।