নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিদিনের পোস্ট || শাকিব-অপুর বিয়ের বিষয়ে জানতেন না বুবলী|

ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খানের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানিয়েছিলেন নায়িকা শবনম বুবলী। তবে সেই সংবাদ সম্মেলন আর করেননি বুবলী। ফলে সবাই ধরেই নিয়েছিল, হয়ত দ্বন্দ্ব মিটমাট করে নিয়েছেন তারা। কিন্তু না, এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রস্তুতি নিয়েই মুখ খুললেন বুবলী। দীর্ঘ এক ভিডিও বার্তায় বুবলী জানালেন শাকিব খানের সঙ্গে তার নিজের এবং অপু বিশ্বাসের সম্পর্কের কথা।

ক্যারিয়ারের প্রথম দিকের কথা টেনে বুবলী বলেন, ‘আমি ২০১৬ সাল থেকে কাজ করছি। শাকিব খান, যিনি আমার সন্তানের বাবা, আমার স্বামী, তার সঙ্গে আমি কাজ শুরু করি বা সুযোগ পাই। উনি আমাকে মেন্টর হিসেবে গাইড করতেন। ওনার মাধ্যমেই আমার ফিল্মে আসা। ওই সময়ে আমি কেন, পুরো বাংলাদেশের কেউ কি জানতেন ওনার আগের কোনও সম্পর্ক নিয়ে? এটা কিন্তু আমরা কেউই জানতাম না।’

বুবলী জানান, শাকিব খান নিজেকে তার কাছে সিঙ্গেল হিসেবেই উপস্থাপন করেছিলেন। সেই সুবাদেই তাদের মধ্যে ভালো লাগা তৈরি হয়। কিন্তু পরবর্তীতে যখন অপু বিশ্বাস টেলিভিশন লাইভে এসে বোমা ফাটালেন, অভিযোগের তীর ছুটে আসে বুবলীর দিকেই।

ওই সময়টা নিয়ে বুবলীর ভাষ্য, ‘২০১৭-তে যখন বিষয়গুলো সামনে আসলো, তখন শাকিব খান নিজেও অবাক হয়েছিলেন। অপু বিশ্বাস অনেক সিনিয়র আমার থেকে। অনেক বছর ধরে কাজ করেছেন। তাকে অবশ্যই আমি কাজের জায়গা থেকে সম্মান করি। তার সঙ্গে কখনই আমার সামনাসামনি দেখা হয়নি। ২০১৭ সালে তিনি লাইভে আসার আগে হঠাৎ আমাকে ফোন করেছিলেন এবং অনেক বাজে ব্যবহার করেছিলেন। আমি বুঝতে পারিনি কেন! ওই ব্যবহারের জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। ওই বাজে ব্যবহারের কথা তিনি নিজেও পরবর্তীতে স্বীকার করেছিলেন।’

বুবলী বলেন, ‘আমার কষ্টের জায়গা ছিল, আমি তো কিছুই জানি না। আমাকে যেভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছিল, সেটা তো আমি না। সে কারণেই আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম’।

বুবলী জানান, এসব বিষয়ে শাকিবের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলেছিলেন তিনি। তার দাবি, ‘আমি শাকিব খানের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, পরে তিনি অনেক ইমোশনালি আমাকে বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই কথাগুলো তোমাকে বলতে চাচ্ছিলাম। আমার কাছে মনে হয়েছে যে, তুমি তো এটাতে জড়িত নও। অপু বিশ্বাসের সঙ্গে এক বছর ধরে আমার যোগাযোগ নেই।’ এটা অপুদি নিজেও লাইভ প্রোগ্রামে বলেছিলেন। আপনারা অনেকেই জানেন, শাকিব খানের কথা অনুযায়ী অপু বিশ্বাসকে তিনবার অ্যাবরশন করতে হয়েছিল। চতুর্থবার বাধ্য হয়েই তিনি সন্তান নিয়েছিলেন। এসব ঘটনায় তো আমি নেই। তখন সিনেমাতেই আমার অস্তিত্ব নেই। কেন আমাকে দোষারোপ করা হলো যে, আমার কারণে কারও সংসার ভেঙেছে? আমার কারণে কারও সংসার, সম্পর্ক ভাঙেনি। আমি স্পষ্ট করে দর্শকের উদ্দেশে বলতে চাই
বুবলীর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘তাদের ডিভোর্স হয়ে যাওয়াটা, সেটাও তো সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা। তারা তো ম্যাচিওর মানুষ। কোনও সম্পর্কে সমস্যা হওয়ার পর একজন যখন আরেকটি সম্পর্কে যুক্ত হন, সেটার জন্য কি ওই নতুন মানুষ দোষী হয়ে যায়? আমাদের সমাজে অনেকেই নতুন সম্পর্কে যুক্ত হচ্ছেন না? তাদের যদি ভুল বোঝাবুঝি হয়, কোনও সমস্যা তৈরি হয়, তারা যদি সেই সম্পর্ক থেকে বের হয়ে যেতে চায়, এটার জন্য কি নতুন মানুষটি দায়ী?’

তিনি বলেন, ‘শাকিব খান নিজেই আমাকে বলেছেন, তিনি এই সম্পর্কে (অপু বিশ্বাসের সঙ্গে) সুখী নন। তিনি তার জায়গা থেকে আমাকে অনেক কিছুই বলেছেন। যেটা আমি তার সম্মানার্থে আগেও বলিনি, আজও বলবো না। এটুকু বলি, আমি তো অনেক পরে এসেছি, তাদের সমস্যাগুলো তো অনেক আগে থেকেই।’

শাকিব-অপুর সন্তান জয়ের জন্মদিনে নিজের বেবি বাম্পের ছবি প্রকাশ্যে আনেন বুবলী। এ নিয়েও রয়েছে অনেক প্রশ্ন, বিতর্ক। বিষয়টি নিয়ে বুবলীর জবাব, ‘অনেকের এই প্রশ্ন আছে যে, আমি কেন হঠাৎ করে জয়ের (শাকিব-অপুর ছেলে) জন্মদিনে আমার বেবি বাম্পের ছবি দিলাম। দেখুন, জয়ের ব্যাপারে আমি আমার স্বামী শাকিব খানকে কতটা পজিটিভলি দেখতে বলি, এটা উনি জানেন এবং ওনার আশেপাশে যারা কাছের মানুষ আছেন, তারা জানেন।’

বুবলী বলেন, ‘অনেকেই খুব বিরক্ত হচ্ছেন যে, আমি কেন এসব নিয়ে রেসপন্স করি না। অনেকের সম্মানের কথা ভেবে আমি আজকেও অনেক কিছু বলছি না। জয়কে আমি কতটা সাপোর্ট করি, এটা শাকিব খান খুব ভালো করেই জানেন। ওর সুন্দর একটা ভবিষ্যতের জন্য সবরকম পরামর্শ আমি দিয়েছি। আমার বেবি বাম্পের ছবি যে ওর জন্মদিনে ছাড়া, বিষয়টা এভাবে ভেবে করিনি আমি। যতদূর জানি, জয় এবার ছয় বছরে পড়েছে। তো এর আগে অনেকগুলো বছর গেছে, আমি তো কোনও জন্মদিনে এমনটা করিনি। সবসময় ওর জন্য ভালোবাসা, দোয়া দিয়ে এসেছি। আমিও তো একটা মানুষ, আমারও তো কষ্ট থাকতে পারে। আমি তো শুধু বেবি বাম্পের ছবি দিয়েছি। কাউকে দোষারোপ করেও তো কিছু বলিনি। শুধু নিজের আবেগের জায়গা থেকে একটা বিষয় শেয়ার করেছি

এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ । রিপু /প্রতিদিনের পোস্ট